আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৫) নামে বিএফডিসির এক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তার সহকর্মীরা। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা হেফাজতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) এই ফ্লোর এ্যান্ড সেট ইনচার্য এর মৃত্যু হয়।
সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য থানার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আজমের ফাঁসির দাবি করে বিক্ষোভ করেন তার সহকর্মীরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ওসির ফাঁসির দাবিতে বিএফডিসির সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিএফডিসির সব শ্রেণির কর্মচারীরা। এ সময় তাদের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আজমের ফাঁসি চাই বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিএফডিসির সড়ক অবরোধ করে রাখে সহকর্মীরা। পরবর্তীতে পুলিশের আশ্বাসে তারা সড়ক ছেড়ে দেয়।
এর আগে রবিবার রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল হাজতখানায় মারা যান আবু বক্কর।
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি আত্মহত্যা। কিন্তু তার সহকর্মীরা দাবী করছেন, জানালার গ্রিলের সঙ্গে কেউ চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তার শরীরে দাগ, গলায় চিকন দাগ, চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করলে তার গলায় মোটা দাগ থাকবে। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
জুনিয়র ক্যামেরা সহকারী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আমরা ওসির বিচার চাই। কেন এমন ঘটলো, আমরা তা জানতে চাই।’
বিএফডিসির কর্মচারি ইয়ানুল ইসলাম বলেন, সে সুস্থ ছিলো যখন তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু থানা থেকে যখন বের করা হয় তখন সে মৃত। থানা পুলিশ হেফাজতে এই মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না।
বিএফডিসি’র তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের নেত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, ‘আবু বক্করকে গ্রেফতার করা হলো শনিবার, তখনও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। মামলা হয়েছে রবিবার। মামলা হওয়ার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। জানালার গ্রিলের সঙ্গে কেউ চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তার শরীরে দাগ, গলায় চিকন দাগ, চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করলে তার গলায় মোটা দাগ থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবু বক্কর সরকারি কর্মকর্তা। ঢাকার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেওড়াপাড়ার একটি কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, এমন চিঠিও আসছে। তার সঙ্গে পুলিশ এমন আচারণ করলো কীভাবে? আমরা এর বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, তার সহকর্মী জানান, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আবু বক্কর সিদ্দিক এফডিসি থেকে বের হন। বের হওয়ার পর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রাতে এফডিসির এডি অ্যাডমিন প্রশাসন রফিকুল ইসলামকে ফোন দিয়ে থানা থেকে জানানো হয় আবু বক্কর সিদ্দিক মারা গেছেন। ভোর ৪টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, আবু বক্কর এফডিসিতে ফ্লোর অ্যান্ড সেট ইনচার্জ পদে কাজ করতেন। পুলিশ রাতে ফোন দিয়ে জানায়, তাকে সাতরাস্তার আশপাশ থেকে রাত ৩টার দিকে আটক করা থানায় নেয়া হয়। এরপর কোনো এক সময় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
আরআর