এলএসডি কারবারে কেন জড়াচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা?

‍নিউজ ডেস্ক জুন ৫, ২০২১, ১১:২৩ এএম

ঢাকাঃ দেশে মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক কারবারে বা সেবনে জড়িত থাকায় বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গ্রেফতার হয়েছেন। সম্প্রতি লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড বা এলএসডি নামে নতুন এক প্রকারের মাদকের সঙ্গে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে এসেছে। এ নিয়ে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

কয়েকদিনে দেশে এলএসডি কারবারের সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতার সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা গত এক বছর ধরে এলএসডি সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এলএসডির মতো ভয়াবহ মাদকে জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক-অভিভাবকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড বা এলএসডি মাদক সেবনে মানুষের বিভ্রম (হ্যালুসিনেশন) তৈরি হয়। এই মাদক সেবনের পর মস্তিষ্কে এক ধরনের প্রভাব (হ্যালুসিনোজেনিক অ্যাফেক্ট) তৈরি হয়, যা ব্যক্তির ব্যবহার ও চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বিশেষ করে এটি নেয়ার পর সাধারণভাবে যে ধরনের রঙ প্রকৃতিতে দেখা যায়, তার চেয়েও বেশি রঙ দেখতে পায় মাদকসেবী।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নানা রকম দুশ্চিন্তায় অনেক শিক্ষার্থী মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। তবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা মাদকে জড়িয়ে পড়ছেন- এটা অনেক কারণের মধ্যে একটি। যেমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় তারা কোথায় যাবেন, কোথায় গিয়ে সময় কাটাবেন- এ রকম একটা অবস্থার মধ্যে তারা আছেন। আর শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে চ্যানেল হিসেবে এই মাদক ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে কয়েকটি চক্র। যাদের অনেক টাকা-পয়সা আছে এবং যেসব অভিভাবক টাকা-পয়সার হিসাব করেন না, তাদের সন্তানই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের ‘আত্মহত্যা’র কারণ খুঁজতে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তের মধ্যে রাজধানীর একটি বাসা থেকে এলএসডি মাদক মাদক জব্দ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ। হাফিজুরের ‘নিজেকে শেষ করে দেয়া’র সঙ্গে এই মাদকের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। মূলত ওই মৃত্যু তদন্তেই এলএসডি মাদক সামনে চলে আসে।

পুলিশ বলছে, এলএসডি সেবনকারীদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তাদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। এছাড়া সম্প্রতি গ্রেফতার বিশ্ববিদ্যালয়ে আট শিক্ষার্থীর চক্র দুটি ছাড়াও এলএসডি কারবারে জড়িত আরও কয়েকটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।