জেলখানায় জঙ্গিদের তালিম নেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০, ০৬:২৭ পিএম

ঢাকা: আশুলিয়া ও ধামরাই হতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা জেলে বসে আর অনলাইনে তালিম নিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব ৪-এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হোসেন।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আটককৃত ৫ জঙ্গিরা হলেন, অলিউল ইসলাম ওরফে আব্দুল্লাহ (২৩), মো. মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ ওরফে আল্লাহর গোলাম (২০), মো. সবুজ হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ এবাজ উদ্দিন (২৬), মো. আরিফুল হক ওরফে আরিফ ওরফে হৃদয়, রাশিদা ওরফে হুমায়রা (৩৩)।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এর সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দেয়।

তাদের মধ্যে অলিউল ইসলাম ওরফে আব্দুল্লাহ’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, তিনি এইচএসসি পাশ করে কিছুদিন স্থানীয় মসজিদে আরবী শিক্ষা গ্রহণ করেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার কারনে ২০১৯ সালে আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়। ২ মাস কারাভোগ করেন। জেলখানায় থাকাকালীন আটককৃত দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের সংস্পর্শে আসে এবং তাদের কাছ থেকে জঙ্গি সংক্রান্ত কার্যক্রমে আরো দিকনির্দেশনা গ্রহণ পূর্বক অধিক দক্ষতা অর্জন করেন। ফেসবুক ছাড়াও তিনি বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম চালু রাখেন। তিনি একটি উগ্রবাদী চ্যানেলের এ্যাডমিন হিসেবে উগ্রবাদী কার্যক্রম চালিয়ে যান এবং সদস্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালান।

আবার নারী সদস্য রাশিদা ওরফে হুমায়রা একটি মাদ্রাসা হতে ৮ম শ্রেণি পাস। ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় কিন্তু ৩ বছরের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তিনি ২০১৪ সালে দুবাই যান এবং দুবাই থেকে এসে ২০১৭ সালে কাতার যান। কাতার থাকা অবস্থায় অনলাইনে আল্লাহর গোলাম নামক ফেসবুক আইডির সাথে পরিচয় হয় যার এডমিন মো. মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ। কাতার অবস্থানকালে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং কার্যক্রমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সাথে জড়িয়ে পড়েন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নারী সদস্য সংগ্রহ ও সংগঠিতকরাসহ সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করা শুরু করেন। অন্য ৩ জনও বিভিন্ন জনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতাকারীদের উপর তারা আকস্মিক আক্রমণ করে কঠোর শাস্তি বা টার্গেট কিলিং করে থাকেন। নিয়মিতভাবে তাদের সদস্যদের কাছ থেকে মেহনতের মাধ্যমে ইয়ানত সংগ্রহ করেন। এই দলের সদস্যরা এন্ড্রয়েট মোবাইল বা ল্যাপটপ-এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রটেক্টিভ অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন গোপন গ্রুপ তৈরি করে উগ্রবাদী সংবাদ, বই, উগ্রাবাদী ব্লগ, উগ্রবাদ উৎসাহমূলক ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে নিয়মিত নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন।

আগামীনিউজ/আরিফ/হাসি