গাড়িতে পুলিশের স্টীকার লাগিয়ে চলতো ওরা

নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০, ০৭:৩৫ পিএম

ঢাকা : পুলিশ ও আইনজীবীর স্টীকার গাড়িতে লাগিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়ানোর অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতাকৃতরা হচ্ছে, মো. সজল আহম্মেদ (২৮) ও মো. মামুন হোসেন (২৬)।

এসময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের স্টিকারযুক্ত প্রাইভেট কারসহ অশ্লীল ভিডিও ধারণ করা মোবাইল ফোন, মেমোরীকার্ড জব্দ ও একজন নারী ভিক্টিমকে উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীনা রানী দাস আগামীনিউজ ডটকমকে জানান, মঙ্গলবার বিকালে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, র‌্যাব-৩ মোবাইল পেট্রোল টিম খিলগাঁও ফ্লাই ওভারের নীচে এক নারীর চিৎকার শুনতে পেয়ে পুলিশের স্টিকারযুক্ত একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালায়। এসময় গাড়ির ভিতর থেকে এক নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্ত সজল ও মামুনকে আটক করা হয়। টয়োটা কোম্পানির সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারটির রেজিষ্ট্রেশন নম্বর- ঢাকা মেট্রো-গ-২৩-৫০৪৩। এসময় গাড়িটিকে জব্দ করে র‌্যাব।

বীনা রানী বলেন, ‘উদ্ধারকৃত ভিক্টিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি একজন গৃহিনী এবং বর্তমানে দুই সন্তান ও স্বামীর সাথে সবুজবাগ থানাধীন একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। গ্রেফতারকৃত আসামি সজলের সাথে ভিক্টিমের বিবাহপূর্ব প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এর প্রেক্ষিতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিক্টিমের কিছু অনৈতিক স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্র তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে।’

‘পরে সজল ভিক্টিমকে বিয়ে করতে অস্বীকার করলে তিনি বর্তমান স্বামীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সজল তার কাছে থাকা ভিক্টিমের আপত্তিকর স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্রগুলো ভিক্টিমের স্বামী, মা-বাবা, ভাই-বোন এবং শশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দিবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে। প্রকাশ্যে এবং মোবাইল ফোনে এমন হুমকি দিয়ে সে ভিক্টিমকে নিয়মিত ব্ল্যাক মেইল করে আসছিলো’ যোগ করেন র‌্যাবের এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

তিনি আরো বলেন, ‘ভিক্টিমের সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে সে সজলের সকল অন্যায় আবদার পূরণ করতে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সে সজলের সাথে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে সজল ক্ষুদ্ধ হয়ে তার নিকটে থাকা ভিক্টিমের আপত্তিকর স্থির ও ভিডিও চিত্রগুলো ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়। এরপরও ভিক্টিম সজলের অন্যায় আবদার পূরণ করতে অনীহা প্রকাশ করে। তখন সে ভিক্টিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।’

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামুন হচ্ছে জব্দকৃত প্রাইভেট কারের চালক। সে গাড়িতে পুলিশ এবং আইনজীবি স্টিকার লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ ও মাদক বহনের মত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে আসছে। চেকপোস্টে গাড়ির মালিকের নাম জিজ্ঞাসা করলে সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে।

নিয়মিত ইয়াবা সেবন এবং ভিক্টিমকে অপহরণ ও তার আপত্তিকর স্থির ও ভিডিও চিত্রগুলো ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার কথাও স্বীকার করে তারা।

গ্রেফতারকৃতদেরকে ইতোমধ্যেই খিলগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীনা রানী।

আগামীনিউজ/রাফি/সবুজ