হরতাল-অবরোধে বেনাপোল বন্দরে ট্রাক সংকট, হুমকিতে বাণিজ্য

বেনাপোল প্রতিনিধি নভেম্বর ২৩, ২০২৩, ০২:২৮ পিএম

যশোরঃ বেনাপোল স্হলবন্দরে বিএনপি-জামায়াতের একের পর এক হরতাল-অবরোধের কারণে বেনাপোল বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহনের ট্রাক সংকটের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু ট্রাক মিললেও ভাড়া বেড়েছে ট্রাকপ্রতি ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে স্বাভাবিক পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দেশের শিল্প কলকারখানার উৎপাদন চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে অপেক্ষায় ভারতীয় ট্রাক, হরতাল-অবরোধের কারণে ট্রাক সংকট, ফলে এসব পণ্য আনলোড করা যাচ্ছে না।

বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে রেল ও সড়ক পথে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রফতানি হয় ভারত থেকে। এসব পণ্যের মধ্যে বড় একটি অংশ শিল্পকলকারখানা স্থাপনের যন্ত্রাংশ, উৎপাদন সামগ্রীর কাঁচামাল, কেমিকেল, অক্সিজেন ও খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য।
তবে বর্তমানে চলা বিএনপি-জামায়াতের একের পর এক হরতাল-অবরোধে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বন্দরটিতে। ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও, নাশকতার ভয়ে ট্রাক সমিতির অনেকে বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন করতে চাচ্ছেন না। এতে পণ্য পরিবহনে ট্রাক সংকটের মুখে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। হরতালের কারনে রাতে বেলাই
 ট্রাক চলাচল করে বেশী। 

আমদানিকারকরা জানান, আগে বেনাপোল টু ঢাকা ট্রাক ভাড়া ১৮ হাজার টাকা থাকলেও এখন তা বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। আর চট্টগ্রাম রুটের ভাড়া ৮ হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ায় সরবরাহ যেমন কমেছে, তেমনি সময়মতো কাঁচামাল না পৌঁছানোয় শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।

দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে হরতালের নামে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড এড়িয়ে রাজৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারতীয় পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসা ট্রাকচালক তাপস বলেন, ‘আমদানি পণ্য নিয়ে দুইদিন ধরে বন্দরে দাঁড়িয়ে আছি। বাংলাদেশি ট্রাক সংকটে পণ্য আনলোড হচ্ছে না। এতে আমদানি পণ্যের জট বেড়েছে।’

বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সেক্রেটারি আজিম উদ্দীন গাজী জানান, ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক আছে। বেনাপোল বন্দরে কোনো হরতাল নেই। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতামূলক ঘটনায় চাহিদামতো ট্রাক বন্দরে আসছে না। এতে পণ্য খালাসের পরিমাণ কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে প্রায় ৪৫০ ট্রাক পণ্য খালাস হলেও, ট্রাক সংকটে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০০ ট্রাকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পড়বে।

আমদানিকারক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বেশি ভাড়া দিয়েও ট্রাক না মেলায় ক্ষতির মুখে পড়েছি। ঢাকার ভাড়া ৪ হাজার ও চট্টগ্রাম রুটে ৮ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, কাস্টমসের কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে হরতালের কারণে বন্দরে ট্রাক সংকটে জরুরি 

আমদানি পণ্য গন্তব্যে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। হরতাল ও অবরোধ এড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অনুরোধ জানান এ ব্যবসায়ী নেতা।

মনির হোসেন/এমআইসি