যশোরঃ শার্শা উপজেলার নাভারন কাঠশেকরা গ্রামের মাঠে সবুজ পাতার ফাঁকে মাচায় ঝুলছে ঝিঙে-পটল। মালচিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড শসা, ঝিঙে ও পটল চাষে কম খরচে ফলন বেশি পাওয়া যায় বলে সবাইকে তাক লাগিয়েছেন মমিনুর রহমান (৬৫) নামে এক কৃষক। মমিনুর রহমান শার্শা উপজেলার নাভারন কাঠশেকরা গ্রামের মৃত সামছের রহমানের ছেলে।
জানা যায়, মমিনুর রহমান (৬৫) একজন আদর্শ সবজি চাষী। কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রতি বছর সে বিভিন্ন রকমের সবজির চাষ করে থাকে। বাজারে সবজির চাহিদা থাকায় এবং দাম বেশি ফলন ভালো পাওয়া যায় বলে সে সবজি চাষ করে আসছে। তার বাড়ির পাশে মাঠে দু‘বিঘা ৬৬ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধিতে উচ্ছে, শসা, বেগুন, পটল, ঝিঙে চাষ করেছেন।
উপরে সবুজ আর ভিতরে কাটলে সাদা রান্নার পর সুস্বাদু মিষ্টি খেতে খুব মজা। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে বড় বড় লাম্বা ঝিঙে মৃদু বাতাসে মাচায় দুলছে। দু‘বিঘা জমিতে মালচিং এ চাষে খরচ হয়েছে আশি হাজার টাকা। ইতিমধ্যে সে লাখ টাকার বেশি শসা ও পটল বিক্রি করেছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, মাঠে এখনও ঝিঙে ও পটল যা আছে তাতে এক লাখ টাকা বিক্রি হবে। বর্তমান তার এখানে ৫-৬ জন বেকার মানুষের কর্মস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
মমিনুর রহমান জানান, শার্শা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ শেষে ইয়ার মালিক সিড কোম্পানির ময়নামতি জাতের শসার বীজ বগুড়া থেকে সংগ্রহ করে বপন করেন।
মালচিং পদ্ধতিতে বেড তৈরি এবং রাসায়নিক ও জৈব সার একসাথে প্রয়োগ করে আবাদকৃত জমি পলিথিনের মালচিং সেড দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। এতে অতি বৃষ্টিতেও মাটির গুণাগুণ নষ্ট হয় না। এ পদ্ধতিতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কম হয়। শসা ও ঝিঙে রোপণের ২৫ দিনের মধ্যে ফুল আসে ও ৪৫ দিনের মধ্যে বড় হয়ে যায় এবং ৭০ দিন পর্যন্ত ভালো ফলন পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, বারো মাসেই শসা, পটল, ঝিঙের ব্যাপক চাহিদা থাকে এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। চলতি মৌসুমে পাইকারি হিসেবে প্রায় ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ থেকে সহযোগিতা পেলে কৃষিতে আরও সাফল্য ঘটানো সম্ভব বলে মমিনুর রহমান মনে করেন।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় ১৬৫০ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন হয়েছে এবং ৫০ হেক্টর জমিতে শসা উৎপাদন হয়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ আধুনিক চাষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যবহারে জমিতে সার ও সেচ অন্যান্য পদ্ধতির থেকে কম লাগে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগ বালাইও অনেক কম। আগাছা দমন হওয়ার জন্য এই পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো কাজ হয়।
মোঃ মনির হোসেন/বুইউ