মাগুরাঃ সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বিদেশীদের কাছে ধরণা দিয়ে লাভ নেই। আগামী নির্বাচন সংবিধান সম্মতভাবেই সম্পন্ন হবে।
শনিবার (১০ জুন) মাগুরা ওয়াপদা মোড়-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়ক ও লাঙ্গলবাধ টু পাংশা ব্রিজের কাজ পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জনসভার আয়োজন করে শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
প্রতিদিন মির্জা ফখরুল বা বিএনপির নেতারা বিদেশী দূতাবাসে দৌড়াচ্ছেন দাবি করে হানিফ বলেন, বিদেশি দূতাবাসে ধর্না দিচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন বিদেশিরাই ওনাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে বসাবেন। আমরা বলেছি এদেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। জনগণ যতদিন শেখ হাসিনার পাশে আছে কোনো শক্তি নেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার। বিদেশি প্রভুরা এরা আপনাকে ক্ষমতায় বসাতে পারবেনা। ষড়যন্ত্র করে লাফালাফি করতে পারেন কিন্তু তাতে কোনো ফল হবে না।
হানিফ বলেন, ২০১২ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হয় তখন বিএনপি এবং জামায়াত মিলে সরকার পতনের আন্দোলনে শুরু করেছিল। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ঘোষিত হল। সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, কবে থেকে চূড়ান্ত আন্দোলন হবে। জবাবে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ঈদের পরে আন্দোলন চূড়ান্ত হবে। আজ ২০২৩ সাল। বহু ঈদ চলে গেছে। বহু আন্দোলন দেখেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এখনো আছে।
বিএনপি ২০২৯ সালের পর ক্ষমতায় যেতে পারবে কি না তা নিয়ে ভাবতে বলেছেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। তিনি বলেন, ‘২০১২-১৩ সালে বলেছিলাম, ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এতো তাড়াতাড়ি দেইখেন না। ২০২৯ সালের পরে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে কি-না সেটা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, ভাবেন। ২০২৯ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে।’
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন তুলে হানিফ আরও বলেন, ‘আপনারা কার নেতৃত্বে ক্ষমতায় যেতে চান। আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে কারাগারে আছেন। আর আরেকজন হাওয়া ভবন বানিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। দুর্নীতিবাজ, দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। কাকে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন? দেশের মানুষের কী আর কাজ নেই যে, একজন সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজকে ক্ষমতায় বসাবে।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইদানিং কিছু কিছু বিএনপি নেতা ও ছোট ছোট কয়েকটি দল লাফালাফি করে বক্তব্য দিচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন, বিদেশি প্রভুরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। এ বাংলার গ্রাম-গঞ্জের মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে। দেশের মানুষ উন্নয়ন, শান্তি চায়। কোনো দুর্বৃত্তের পক্ষে থাকতে পারে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, ‘লাফালাফি বন্ধ করে নির্বাচনে আসুন। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।’
এর আগে তিনি মাগুরার-ওয়াপদা মোড়-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়ক ও লাঙ্গলবাঁধ-পাংশা ব্রিজের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই, রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম, মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ (জর্জ), মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আবদুল ফাত্তাহ, শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম. আব্দুল হাকিম আহমেদ, ধলহরাচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান ও শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক মতিয়ার রহমান বিশ্বাস প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই গড়াই নদের ওপর লাঙ্গলবাঁধ-পাংশা সেতু উদ্বোধন করা হবে। এটি চালু হলে মাগুরা ও ঝিনাইদহের সঙ্গে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার যোগাযোগ আরও সহজ হবে। এ সময় মাগুরার শ্রীপুর, ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলাসহ আশপাশ এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন তাঁরা।
বুইউ