সাতক্ষীরাঃ কলারোয়ায় ২০০২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকিদের ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করায় তিনজন বিএনপি সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা-১ তালা কালারোয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আব্দুল কাদের বাচ্চু, আরিফুল ইসলাম, রিপন। বাকি আসামিদের ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলায় মোট ৪৮ জন সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাছাড়া ৯ জন আসামি পলাতক রয়েছেন এবং ২ জন আসামি মারা গেছেন।
মামলার এজাহার ও তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলা হয়। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করে ও বোমা বিস্ফোরণ করে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এ সময় বহরে থাকা ১৫–২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম ও তার নেতাকর্মীরা এ হামলার পেছনে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ।
এ ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিন ভাগে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে সাক্ষী করা হয় ৩০ জনকে। তবে ৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি স্থগিত করা হয়। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।
বুইউ