চার লাখ টাকা চুক্তিতে সিএনজিকে চালককে জবাই করে হত্যা, গ্রেফতার ৮

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী মার্চ ১৩, ২০২৩, ০৪:১২ পিএম

নোয়াখালীঃ জেলার সদর উপজেলায় সিএনজি চালক আব্দুল হাকিমকে (৩৫) জবাই করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শনিবার (১১-১২ মার্চ) বিকেলে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুর পৌনে ১টার দিকে এক প্রেস কনফারেন্সে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন—সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো.মমিন উল্যার ছেলে মো.মহিন (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো.কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আনোয়ারুল হক নশুর ছেলে মো.আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির শাহজাহানের ছেলে রিপু মিয়া (২১) আক্কাস সওদাগর বাড়ির আক্কাস সওদাগরের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো.সেলিমের ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকান বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে মমিন উল্যাহ (৩৭),পাটোয়ারী বাড়ির অজি উল্যার ছেলে নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)।  
 
প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার জানায়, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সাথে ভিকটিম নিহত সিএনজি চালক আব্দুল হাকিমের সাথে পূর্ব শক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। পরিকল্পনাকারী পূর্ব শক্রতার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আব্দুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আব্দুল হাকিমের সিএনজির মালিক মহিমকে ব্যবহার করা হয়। ঘটনার দিন রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পূর্ব পরিকল্পনা হিসেবে মহিম তার বাড়িতে কামাল, রিপু, মোমেন, নূর আলমসহ আরো কয়েকজনকে (তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না) নিয়ে অবস্থান করে। মহিম ভিকটিম আব্দুল হাকিমকে সিএনজি রাখার কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেয়।

তিনি জানান, এরপর হাকিম মহিমকে সিএনজি জমা দেওয়ার সময় হত্যাকাণ্ডেে মূল পরিকল্পনাকারী অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন মিলে আকস্মিক ভিকটিমের মুখ বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে সকল আসামিরা ভিকটিমকে উপজেলার ১৯নং পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ রাস্তার পূর্ব পাশে ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির পিছনের ডগির ভিতরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে জবাই করে। গ্রেফতারকৃত রিপু ও অপর একজন (নাম প্রকাশ করা যাচ্ছেনা) লাশ গোপন করার জন্য শাবল, কোদাল ও বস্তা নিয়ে যায়। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিতের পর ভিকটিমের লাশ বস্তার ভিতর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দেয়।

পুলিশ সুপার আরো জানায়, তদন্তকালে আসামি সোহেলের ভাষ্যমতে আসামি রিপুর বাড়ি থেকে শাবল ও কোদাল উদ্ধার করা হয়। মামলার মূল পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ড সংগঠনের জন্য আসামি মহিনের সাথে ৪ লক্ষ টাকা চুক্তি করেছিলেন।  

এছাড়া তিনি জানান, আসামি রিপু ও সোহেল ওরফে শাকিল  ত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। গত শনিবার ও গতকাল রোববার বিকেলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল/বুইউ