টাঙ্গাইলঃ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার জেলা দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে বিচারক শেখ আব্দুস সামাদ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ওই কলেজছাত্রীর করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৩ জানুয়ারি (সোমবার) টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা সুলতানা তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
কলেজছাত্রীর আইনজীবী মো. রাসেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মনজুর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন আবেদন করেন। উচ্চ আদালত থেকে মনজুর হোসেনকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়। সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মনজুর হোসেন ২০২১ সালে বাসাইলে ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকার সময় ফেসবুকের মাধ্যমে মির্জাপুরের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মনজুর হোসেন বিভিন্ন সময় ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে যান। টাঙ্গাইল শহরে বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা একত্রে কয়েক মাস বসবাসও করেন। পরে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দিলে মনজুর হোসেন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২১ জুন ওই কলেজছাত্রী আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে দন্ডবিধি আইনের ৪৯৩ ধারার (বিবাহের বিশ্বাসে প্ররোচিত করে স্বামী স্ত্রী রূপে সহবাস) অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
মনজুর হোসেন রাজবাড়ীর পাংশা থানার চরঝিকড়ী গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি হিসেবে সংযুক্ত আছেন।
শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা/বুইউ