চুয়াডাঙ্গাঃ পৌঁষের হাড় কাঁপানো শীতে কাপছে চুয়াডাঙ্গা। অব্যাহত শৈত্য প্রবাহে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গত দুইদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। আজ রোববারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান।
ভোর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। সন্ধ্যা গড়ালেই নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের দেখা মিললেও নেই কোনো উত্তাপ। এতে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন তারা। হঠাৎ করেই শীত অনুভূত হওয়ায় অনেকের শরীরেই উঠেছে গরম কাপড়। আগাম প্রস্তুতি না থাকায় হঠাৎ শীতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ও ছিন্নমূল মানুষ। শীতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। তীব্র ঠান্ডায় দেখা দিচ্ছে শীতজনিত নানা রোগ। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। মাঝারি শৈত্য প্রবাহে আয় কমেছে শ্রমজীবি মানুষের।
দিনমজুর ষাটোর্ধ্ব আক্কাস আলী বলেন, হাড় কাঁপানো শীতের কারণে ক'দিন বাড়ির বাইরে বের হতে পারিনি। ঘরে জমানো যে টাকা ছিলো সব শেষ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে আজ সকালে কাজের সন্ধানে বের হয়েছিলাম। খুব সকালে বাজারে এসে দেখি কোনো মানুষ নেই। সকাল ১০ টা বেজে গেলেও এখনও কোনো কাজ পাইনি। তাই উপায় না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছী গ্রামের বাসিন্দা পাখিভ্যান চালক জুলমত আলী বলেন, ক'দিন ধরে এতো ঠান্ডা যে ঠিকমতো কাজে বের হতি পারছিনে। আজ একটা সমিতির কিস্তির টাকা দিতি হবে তাই ঘরে শুয়ে থাকতি পারিনি। শীতের ভিতর সকাল সাড়ে ১০ টা বেজে গেলিও এখন মানুষ জনের দেখা মেলছে না। সকাল থেকে মাত্র ৫০ ট্যাকার ভাড়া মারিছি। এরকম শীতযে আর ক'দিন থাকবেনে।
গত ডিসেম্বর মাসে চারদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে চুয়াডাঙ্গায়। এছাড়া বাতাসের আদ্রতার পরিমাণ বেশি। এ মৌসুমে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ও পরে তীব্র শৈত্য প্রবাহে রূপ নিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, গত দুইদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। আজ রোববারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, যা ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরআগে মৃদু শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত ছিল। এখন তাপমাত্রা কমে তা মাঝারি শৈত্য প্রবাহে রূপ নিয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে তীব্র শৈত্য প্রবাহে রূপ নিতে পারে।
জামান আখতার/বুইউ