রাঙ্গামাটিঃ বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম নিউলংকর দাড়িপাড়া গ্রামের মিড পয়েন্ট এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে সুখেন চাকমা (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সজীব চাকমা (২২) নামে আরেক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম।
নিহত সুখেন চাকমা সাজেক ইউনিয়নের মিডপয়েন্ট গ্রামের মঙ্গল চাকমার ছেলে। গুলিবিদ্ধ সজীব চাকমা একই গ্রামের মঙ্গল চান চাকমার ছেলে। তারা দুজনেই ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
তবে সুখেন ও সজীব পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সমর্থক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে সুখেন নিজের মোটরসাইকেল চালিয়ে মিডপয়েন্ট থেকে দাড়িপাড়া গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। সজীব ওই মোটরসাইকেলের পেছনে বসেছিলেন। মিডপয়েন্ট গ্রাম থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। কিছু বলার আগেই দুর্বৃত্তরা সুখেন ও সজীবকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুখেন মারা যান। সজীবকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার জন্য পাহাড়ের আরেক আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন জেএসএস বাঘাইছড়ি উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা। তিনি বলেন, ইউপিডিএফ কমান্ডার আপন চাকমার নেতৃত্বে বিনা উস্কানিতে আমাদের সমর্থকদের হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সাজেক অঞ্চলের সমন্বয়ক আর্জেন্ট চাকমা এ ঘটনায় তাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন। তার দাবি, উলংকর এলাকায় ইউপিডিএফের কোনো কর্মকাণ্ড নেই।
তিনি অভিযোগ করেন, এটি তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়।
বাঘাইছড়ি ও সাজেক থানার সার্কেল এএসপি, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল আওয়াল বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরপরই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছি।
তিনি বলেন, এলাকাটি খুবই দুর্গম। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে তাই একটু সময় লাগবে।
আগামী ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল জনসমাবেশের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জনসংহতি সমিতি। তার দুইদিন আগে এমন ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সমাবেশকে ঘিরে বড় সংঘাতের আশঙ্কা করছেন তারা। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন পয়েন্টে।
বুইউ