মাদারীপুরঃ আজ ২৫ নভেম্বর। শিবচর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। টানা ১৬ ঘণ্টার যুদ্ধ শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে শত্রুমুক্ত হয় শিবচর।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের মে মাসে হানাদার বাহিনী ও তাদের রাজাকার দোসরদের নিয়ে শিবচরে দুই দফায় হত্যাযজ্ঞ চালায়। ৩০ জন নিরীহ নারী-পুরুষকে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে এবং শিবচর থানায় ঘাঁটি স্থাপন করে। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা শিবচর বাজারে পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে পাক বাহিনী আবারও হত্যা-ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট বাড়িয়ে দেয়।
এরপর মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হতে থাকে। আশেপাশের এলাকা থেকেও শিবচর থানা অপারেশনে যোগ দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। ২৪ নভেম্বর মধ্যরাতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের ঘাটি শিবচর থানা মুক্ত অপারেশন শুরু করে।
প্রায় ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় ১৬ ঘণ্টাব্যাপী টানা যুদ্ধ শেষে হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেন।
এ যুদ্ধে শিবচরের আব্দুস ছালাম, ভাঙ্গা উপজেলার কমান্ডার মোশাররফ হোসেন, সদরপুরের কমান্ডার দেলোয়ার হোসেন ও সহযোগী ১১ বছর বয়সের শিশু ইস্কান্দারসহ চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে ১৮ জন ঘাতক হানাদার ও রাজাকার নিহত হন।
যুদ্ধকালীন সাত থানা এরিয়া কমান্ডার ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন খান বলেন, ২৫ নভেম্বর শিবচর থানা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ একটানা দীর্ঘ সময় ব্যাপী যুদ্ধ করে শিবচর থানা আমরা শত্রুমুক্ত করি। দিবসটির গুরুত্ব অনেক। এ উপলক্ষে শিবচরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
বুইউ