পায়ে হেঁটে বাবা-ছেলের তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পথযাত্রা শুরু

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড় নভেম্বর ২০, ২০২২, ১২:০৯ পিএম

পঞ্চগড়ঃ সম্পর্কে তারা বাবা-ছেলে। তবে এই সম্পর্কের বাইরেও তাদের দুজনের মাঝে রয়েছে অভাবনীয় বন্ধুত্ব। এক সাথে চলছেন, ফিরছেন, গল্প করছেন সেই ফাঁকে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন। এই বাবা-ছেলে যুগল নিয়েছেন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ। শুধু পায়ে হেঁটে পুরো দেশ ভ্রমণে নেমেছেন তারা। রোববার (২০ নভেম্বর) ভোর ৬টায় ‘আলোকিত বাংলার স্বপ্নযাত্রা, আমরা করব জয়’ স্লোগানে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট থেকে পতাকা হাতে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছেন তারা। 

এক হাজার কিলোমিটার হেঁটে পাড়ি দেবেন টেকনাফ পর্যন্ত। সফল হলে তাদের অংকে যোগ হবে আরও ২ হাজার ৬৩৯ কিলোমিটার। এ বাবা-ছেলে হলেন গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা সাদেক আলী সরদার (৬৭) এবং তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৭)।

বাবা-ছেলের ৫০তম মিশনে হাঁটবেন ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক। এতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানান ভ্রমণকারী বাবা ও ছেলে। ইতোমধ্যে বাবা-ছেলে ১ হাজার ৬২৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে দেশ ভ্রমণে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তারা। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারও হয়েছে। দীর্ঘ পথের এই যাত্রাটি সফল হলে তাদের হাঁটার অংক দাঁড়াবে ২৬৩৯ কিলোমিটার।

এর আগে গতবছরের ১৪ ডিসেম্বর গাইবান্ধা সাদেক চত্বর থেকে স্থানীয় ফুলছড়ি থানা চত্বর পর্যন্ত প্রথম পথ হাঁটাচলা শুরু করেন। সেখানে প্রাথমিকভাবে ২৮ কিলোমিটার হাঁটছেন তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর-ঘোড়াঘাট-হিলি ও পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধাসহ আরও বেশ কিছু স্থানে পদার্পণ করে। ওইসব স্থানগুলোতে তারা দেখছেন দেশের নানা ইতিহাস-ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থানসমূহ। সম্প্রতি গাইবান্ধা থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত টানা ২২৬ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়াসহ সিলেট থেকে জাফলং পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। এভাবে ৪৯তম মিশন পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন ১ হাজার ৬২৪ কিলোমিটার।

জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা সাদেক আলী সরদার চাকরি করছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ইতোমধ্যে ২০০৬ সালে অবসর গ্রহণ করেছেন। এখানে চাকরি করার সুবাদে হেঁটে শরীর চর্চার অভ্যাসটুকু রয়েছে তার। এ থেকে স্বপ্ন দেখেন বিশাল লম্বা পথ হেঁটে পাড়ি দিবেন দেশান্তরে। সেই জায়গায় যাওয়ার আগেই শুরু করছেন হেঁটে চলার অনুশীলন। সফর সঙ্গী হিসেবে যোগ দিয়েছেন তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান।

ভ্রমণসঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাবার স্বপ্নপূরণে আমিও সঙ্গী হয়েছি তার। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করে নানা ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জনও হচ্ছে। সেটি দেশ ও দশের স্বার্থে কাজে লাগাবো। আজ রোববার (২০ নভেম্বর) থেকে তেঁতুলিয়া-টেকনাফের পদযাত্রা যেন আমাদের সফল হয়, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।’ 

হেঁটে দেশ ভ্রমণের অন্যতম ব্যক্তি সাদেক আলী সরদার বলেন, ‘শুধু তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ নয়, আরও লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। তাই পাগুলোকে বাহন হিসেবে হেঁটে চলা শুরু করা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক সময় চাকরি থেকে অবসর নিয়ে শরীরে নানা রোগে বাসা বেধেছিল। এরই মধ্যে কয়েক দফায় দীর্ঘপথ হাঁটাচলা করে অনেকটাই সুস্থ আছি। যেন শরীরের শক্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এমন চর্চা সবার দরকার বলে মনে করি।’

বুইউ