মোটরসাইকেল আরোহীর নাক ফাটালেন পুলিশের টিএসআই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর নভেম্বর ৩, ২০২২, ১০:৫৪ এএম

রংপুরঃ মোটরসাইকেল পার্কিং করা নিয়ে এক যুবকের নাক ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। মোটরসাইকেল আরোহী হাসান আল মামুন নামে ওই যুবকের দাবি- গাড়ির কাগজপত্র সব কিছু ঠিক থাকার পরও জোরপূর্বক মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেন ট্রাফিক পুলিশের উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) সজল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তার নাকে ঘুষি মারেন টিএসআই সজল। 

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ক্ষুদ্ধ পথচারীরা ট্রাফিক পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বুধবার (০২ নভেম্বর) রাত সাড়ে রাত ১০টার দিকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়। 

আহত মামুন রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ রোডের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মনসুর আহমেদের ছেলে।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর আজাদ হোমিও হলের সামনে মোটরসাইকেল রেখে দোকানের ভেতরে ওষুধ কিনতে যান মামুন। ওষুধ নেওয়া শেষে তিনি বাড়ির দিকে রওনা হলে পথে রংপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই সজল কুমার ও শফিকুল ইসলাম এসে তার মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। পুলিশের কথা মতো মামুন ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখান।

মামুনের অভিযোগ, কাগজপত্র সবকিছু ঠিক দেখানো হলেও ট্রাফিক পুলিশ তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে মোটরসাইকেল রেখে চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর অপরাধে মামলা দেবে বলে জানান। এ সময় মামুন তার বাবাব পরিচয় দিলে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা মামুনকে গালিগালাজ করেন। মামুন মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানের সামনে থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তার নাকে ঘুষি মারেন টিএসআই সজল। এতে মামুনের নাক নিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে এবং তিনি রাস্তায় পড়ে যান।

এ দৃশ্য দেখে পথচারী ও স্থানীয়রা ওই পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আশপাশে থাকা অন্যান্য ট্রাফিক সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সজলসহ মামুনকে নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ডিবি অফিসের সামনেও লোকজন ভিড় করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। 

ভুক্তভোগী হাসান আল মামুন বলেন, আমি রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখেছিলাম। সেখানে আরও ৪ থেকে ৫টি মোটরসাইকেল ছিল। আমার কাছে কাগজপত্র থাকার পরও জোরপূর্বক মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে ট্রাফিক পুলিশ। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমার নাকে ঘুষিও মারেন। এতে আমার নাক ফেটে রক্ত পড়ে আর আমি রাস্তায় পড়ে যাই। পরে স্থানীয়রা আমাকে মাটি থেকে তুলে ওষুধের দোকানে নিয়ে যান। আমি ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণের বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে নগরীর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান বলেন, মামুনসহ অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বসেছিলেন। মামুনের বাবাকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে এনে পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করাসহ বিষয়টি সুরাহা করা হয়েছে।

বুইউ