মশাল জ্বালিয়ে সাফজয়ী পাঁচ পাহাড়ি কন্যাকে বরণ

জেলা প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২, ০১:১৯ পিএম

রাঙ্গামাটিঃ স্থানীয় গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ সাফজয়ী পাহাড়ের ৫ কন্যাকে তিন কিলোমিটার সড়কে মশাল জ্বালিয়ে ভালবাসায় সিক্ত করে বরণ করে নিয়েছেন।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে রাঙ্গামাটি জেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মঘাছড়ি এলাকায় সাফ জয়ী পাহাড়ের ৫ কন্যা রূপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা এবং আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনীরা আসলে তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ সময় কৃতী এ ফুটবলারদের কোচ এবং স্কুলের শিক্ষকসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রামের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত সাফ জয়ী ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, গ্রামবাসী আমাদের এভাবে বরণ করে নেবে আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। আমরা গ্রামবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ।

মনিকা চাকমা বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষকদের কারণে আজ সফলতা পেয়েছি। তাদের কাছে আমরা সবাই অনেক কৃতজ্ঞ। আমাদের শিক্ষক ও গ্রামবাসী আমাদের ফুল ও মশাল জ্বালিয়ে যেভাবে বরণ করে নিয়েছেন, তা সারা জীবন মনে থাকবে।

আনাই মগিনী বলেন, আমার বাড়ি খাগড়াছড়ি হলেও আমি পড়াশোনা করেছি রাঙ্গামাটির ঘাগড়া স্কুলে। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাও শিখেছি। সাফ বিজয়ের পর দেশের মানুষের এত ভালবাসা পেয়ে আমরা সত্যিই খুবই অভিভূত। এ ভালবাসার প্রতিদান হিসেবে আমরা ভবিষ্যতেও দেশের পতাকা সফলতা এনে দিয়ে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবো।

নিজের হাতে গড়ে তোলা পাহাড়ের এ কৃতী ফুটবলারদের সাফল্যে গর্বিত তাদের কোচ এবং স্কুলের শিক্ষাগুরুরা।

স্কুল শিক্ষক শশী মোহন চাকমা বলেন, স্কুল পর্যায়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমেই মূলত রুপণা-ঋতুপর্ণাদের প্রতিভা ফুটে উঠে। তাদের এ অর্জনে আমরা শিক্ষক হিসেবে গর্বিত।

রপণা-ঋতুপর্ণাদের কোচ বীরসেন তঞ্চগ্যা অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি প্রাইমারি স্কুলে থাকাকালে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টে জাতীয় পর্যায়ে রানারআপ দলের এ পাঁচজন নিয়ে ছিলাম। সেই থেকে একসঙ্গে পথচলা শুরু।

তিনি আরো বলেন, রুপণা, ঋতুপর্ণাসহ পাহাড়ের ৫ কৃতী ফুটবলার আমাদের দেশের সম্পদ। আমাদের হাতে গড়ে উঠা এ খেলোয়াড়দের সাফল্যে আমরা পাহাড়বাসী সবাই আনন্দিত। তাদের অর্জনে আমাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। পাহাড়ে আরো অনেক মেধাবী ফুটবলার রয়েছে তাদেরকে রপণা-ঋতুপর্ণাদের মতো গড়ে তুলতে আমরা আরো আন্তরিকভাবে কাজ চালিয়ে যাব।

পাহাড়ের কৃতী ফুটবলারদের আগমনের খবর পেয়ে বুধবার রাতে বিভিন্ন দুর্গম এলাকা থেকে রুপণা-ঋতুপর্ণা, আনাই মগিনীদের দেখেতে ছুটে আসেন পাহাড়ি- বাঙ্গালী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। এযেন ভালোবাসার বিশাল এক বহিঃপ্রকাশ। পরে গ্রামবাসী পাহাড়ের এ ৫ কন্যাকে মশাল জ্বালিয়ে আলোর পথে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। তারা যেন ভবিষ্যতেও সারা বাংলাদেশকে সাফল্যের আলোয় আলোকিত করতে পারে এমন প্রত্যাশায়।

উল্লেখ্য, সাফ জয়ী পাহাড়ের পাঁচ কৃতী ফুটবলারের মধ্যে রুপণা ও ঋতুপর্ণার বাড়ি রাঙ্গামাটিতে এবং মনিকা, আনাই ও আনুচিংয়ের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়। তারা সবাই ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এমবুইউ