সাফজয়ী আঁখির বাবাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি পুলিশের

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ০২:৩৪ পিএম
বাবা-মায়ের সঙ্গে আঁখি খাতুন

সিরাজগঞ্জঃ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে ফিরেছেন ফুটবলাররা। জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা জয়ী দলের সদস্যরাসহ গোটা দেশ। তবে এই আনন্দের মধ্যে খারাপ খবর পেয়েছেন দলের ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। আঁখি খাতুনের বাবাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সরকার থেকে পাওয়া জমি-সংক্রান্ত আদালতের একটি নোটিশ গ্রহণের কাগজে সই করতে রাজি না হওয়ায় তাকে থানায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঁখির বাবা আখতার হোসেন।

ফুটবলার আঁখি খাতুনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পারকোলা গ্রামে। 

জানা গেছে, সরকার থেকে একটি জমি পেয়েছে আঁখির পরিবার। এই নিয়ে আরেকজন মামলা করলে আদালত থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়। আঁখির বাবাকে সেটি দিতে যান সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা পুলিশের এএসআই মামুন। এই নিয়ে আঁখির বাবার সঙ্গে এএসআইয়ের বাগবিতণ্ডা হয়। তখন এএসআই শাসিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। ওই নোটিশে সই করতে রাজি না হওয়ায় তার বাবাকে থানায় উঠিয়ে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঁখির বড় ভাই নজরুল ইসলাম। একইসঙ্গে বাড়িতে এলে আঁখিকেও থানায় যেতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে আঁখি দাবি করেন, ‘আমার বাবাকে থানা থেকে ধমকিয়েছে একটা পেপার নিয়ে। বলেছে সই করতে হবে। বাবা সই করেননি। তাই বাবাকে থানায় নিয়ে যাবে বলেছে। আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে। আমি বাড়িতে যাওয়ার পর আমাকেও থানায় যেতে হবে।’

আঁখির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বাদী বা আসামি কোনোটাই না। আমি পুলিশকে বলেছি, আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আমাকে কটূক্তি করেছে তারা। আর এক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।’

আঁখির বড় ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার বিকালে শাহজাদপুর থানা থেকে এএসআই মামুনসহ একটি টিম এসে আমার বাবাকে বলেন, সরকার থেকে আঁখিকে যে জায়গাটা দেওয়া হয়েছে কোর্ট থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আপনারা এখান থেকে চলে যান। তা না হলে থানায় ধরে নিয়ে যাবো।’

ঘটনার সত্যতা শিকার সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আঁখিদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কোর্ট থেকে একটা নোটিশ এসেছিল। সেই নোটিশে কপিটা এএসআই মামুন আঁখির বাবাকে দিতে গিয়েছিল এবং রিসিভ করে একটা সই দিতে বললে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি আমি শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে এএসআই মামুনকে দিয়ে সরি বলানো হয়েছে।’

শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার পারকোলা গ্রামে সরকারের ২৫ শতক খাস জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে চলতি বছরের মে মাসে আঁখি খাতুনকে আট শতক জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেটা এখন আঁখির পরিবারের দখলে আছে। বাকি জায়গা আমাদের দখলে রয়েছে। কিন্তু কয়েকদিন আগে ওই গ্রামের মোকরাম প্রামাণিক নামের একজন পুরো জায়গায় তার দাবি করে কোর্টে একটা মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট থেকে একটা নোটিশ দেওয়া হয়। সেই নোটিশে কপি আঁখির বাবার কাছে দিতে গিয়েই এএসআই মামুনের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়।’

এমবুইউ