অজ্ঞাত থেকে রনির নাম কাটাতে গুনতে হলো টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৭, ২০২২, ১২:০৪ পিএম

শেরপুরঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের মধ্যে একজন শেরপুর জেলার রমজানুল ইসলাম রনি (২৫)। দেশের জন্য প্রাণ দিলেও সেই রনির মরদেহ আনতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার। 

সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের বালুঘাটা গ্রামের আকরাম হোসেন ওরফে আঙুরের ছেলে রনি। 

রনির ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম রকি বলেন, আমরা মরদেহ শনাক্ত করার পরও অজ্ঞাতনামা থেকে নাম কাটাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডোমদের টাকা দিতে হয়েছে।

এসময় রকি আক্ষেপ করে বলেন, দেশের জন্য প্রাণ দিলেও ভাইয়ের মরদেহ পেতে টাকা গুনতে হলো।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৬টায় নিজ এলাকা শেরপুর সদরের হেরুয়া বালুরঘাটে রমজানুল ইসলাম রনির মরদেহ এসে পৌঁছায়। আজ সকাল দশটায় জানাজা হবে বলে জানিয়েছে পরিবার।

নিহত রনির পরিবার সূত্রে জানা, তিনি দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসের চাকরিতে কর্মী হিসেবে যোগ দেন এবং তিন মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে বদলি হন। তিনি আট মাস আগে বিয়ে করে স্ত্রী রুপাকে নিয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাছেই বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন।

গত শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রমজানুল ইসলাম রনি। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। পরে অন্য ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তার পরিবারকে জানান, দায়িত্ব পালনকালে কনটেইনার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রনি মারা যান।

এ বিষয়ে রনির মামা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. মুকুল আহমেদ বলেন, রনি দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। দেড় বছর আগে তার ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ফাইটার হিসেবে চাকরি হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পোস্টিং হয়। আর সেখানেই সে চাকরিরত ছিল।

তিনি আরও বলেন, গত শনিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় সহকর্মীদের ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আগুন নেভাতে যায় সে। এরপর অনেক খোঁজাখুজি করে তার মরদেহ পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম হাসপাতালের মর্গে রনির মরদেহ শনাক্ত করে তার স্ত্রী।

এমবুইউ