বাগেরহাটঃ শরণখোলায় চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে প্রায় ৫ঘন্টা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিশোরের নাম আশিকুর রহমান (১৩)। সে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের মালিয়া গ্রামের জাকির হাওলাদারের ছেলে। শুক্রবার (৩ জুন) দুপুরে খোন্তাকাটা ইউনিয়নের উত্তর আমড়াগাছিয়া গ্রামের ছয়ঘর এলাকার গরু ব্যবসায়ী ছগির খানের বাড়িতে চুরি করার সময় ধরা পড়ে সে।
খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই বাড়ি থেকে কিশোরকে উদ্ধার করে শরণখোলা থানা পুলিশ।
কিশোর আশিকুর তার স্বীকারোক্তিতে জানায়, তার সঙ্গে একই গ্রামের আনোয়ারে ছেলে রাকিব রাকিব ও আ. লতিফের ছেলে রাসেল নামে আরো দুই জন ছিল। ওই দুই জন তার চেয়ে বয়সে বড়। তারা তিন জন বেশ কয়েকদিন ধরে গরু ব্যবসায়ী ছগির খানের বাড়ির ওপর নজরদারি করছিল। তারা সুযোগ খুঁজছিল ওই বাড়ি কখন ফাঁকা থাকে।
তারা সকাল থেকেই ওই বাড়ির পাশে অবস্থান নেয়। বাড়ির লোকজন যখন সবাই বাইরে চলে যায়, তখন তারা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তাকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে অন্য দুই জন বাইরে ছিল। সে আলমারি ও শোকেস ভেঙে ৫১ হাজার ৬০০টাকা বের করে ওই দুই জনের হাতে দিলে তারা নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে, তাকে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেও কেউ তাকে মারধর কেরনি বলে জানায় ওই কিশোর।
বাড়ির মালিক ছগির খান বলেন, আমি সকালে গ্রামে গরু কিনতে গিয়েছিলাম। আমার স্ত্রী নুপুর বেগম মেয়ে জান্নাতীকে নিয়ে বেলা ১১টার দিকে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তারা বাড়িতে ঢোকে। আমি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে এসে দেখি ঘরের জানালা ভাঙা। তালা খুলে ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখি মালামাল এলোমেলো অবস্থায়। আমাকে দেখে ওই কিশোর ঘরের মধ্যে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করে।
কিশোর চোরকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে চুরির কথা স্বীকার করে। ছগির খান বলেন, আশিকুর ঘরের ভেতরে এবং তার দুই সহযোগী ঘরের বাইরে অবস্থান করছিল। তারা আমাকে দূর থেকে আসতে দেখে ৫০হাজার এবং মেয়ের জমানো ১হাজার ৬০০টাকাসহ মোট ৫১ হাজার ৬০০টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আশিকুরকে ধরে বেঁধে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তাকে দুপুরে ভাত খেতে দিয়েছি। কিন্তু তাকে কোনো মারধরর করা হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান। পরে শরণখোলা থানা পুলিশকে জানানো হয়। তাকে যাতে কেউ মারধর না করে সেব্যাপারে বাড়ির সবাইকে সকর্ত করা হয়েছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন জানান, কিশোরকে দড়ি দিয়ে বাঁদা অবস্থায় গরু ব্যবসায়ী ছগির খানের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কিশোর শোধনাগারে পাঠানো হবে। অন্য দুই জন আটক কিশোরের চেয়ে বড়। তারা পেশাদার চোর। তাদেরকে ধরার চেষ্টা চলছে। তবে কিশোরকে বেঁধে না রেখে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত ছিল।
মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ/এমবুইউ