রাজবাড়ীঃ জেলার গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ঈদের ৬ষ্ট দিনে সরকারী ছুটি শেষে হলেও কর্মস্থলে আজও ছুটছে মানুষ। তবে গতকাল শনিবারের চেয়ে যাত্রী কিছুটা কম। এছাড়াও মহাসড়কে রয়েছে ব্যক্তিগত ও যাত্রীবাহী যানবাহনের দীর্ঘ যানজট। ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা - খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট পর্ষন্ত ৭ কিঃমিঃ পর্ষন্ত যাত্রীবাহী বাস ও কাচা পন্য বোঝাই যানবহন দীর্ঘ সিরিয়ালে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে বাড়তি যানবাহনের চাপে মহাসড়ক এবং ঘাট এলাকায় তৈরি হয়েছে ভয়াবহ যানজট।
অপর দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা নকশিকাঁথা মেইল ( আপ ২৫) ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট ষ্টেশনে আসে। ট্রেনের ছাদেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক যাত্রী নামতে দেখা যায়।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন নদী পারাপার করার জন্য ২১টি ছোট বড় ফেরি ও ২২টি লঞ্চ চলাচল করছে। সরেজমিনে ৮ মার্চ রবিবার সকাল থেকে দুপুর ২ ঘটিকা পর্যন্ত দেখা যায় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রেলগেট পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যাত্রীবাহী বাস ও কাচা পন্য বোঝাই ট্রাক এবং বাইপাস সড়কের দৌলতদিয়া সিনেমা হল-গোয়ালন্দ বাজার গ্রামীণ সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যক্তিগত গাড়িও থ্রি হুইলার (মাহেন্দ্র) দীর্ঘ সারি রয়েছে। এ ছাড়াও ঘাট থেকে প্রায় ১৪
কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় এলাকার প্রায় ২কিলোমিটার অংশজুড়ে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে করে প্রচন্ড গরমে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষগুলোর। মহাসড়কে যানবাহনে দীর্ঘ সিরিয়ালের কারনে অনেকেই পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সা, ভ্যানে করে লঞ্চ ও ফেরি ঘাটের দিকে রওয়ানা হচ্ছেন। তবে ফেরির চেয়ে লঞ্চে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
মংলা বন্দর থেকে পন্য বোঝাই করে আসা কাভার্ডভ্যান চালক আবু তালেব (যশোর - ট ১১ -৩১৩৩) বলেন, বন্দর থেকে জরুরী ক্যামিকেল নিয়ে সিলেট যাচ্ছি। চব্বিশ ঘণ্টা গত হয়ে গেছে এখনও ফেরিতে উঠতে পারলাম না।
কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্য লঞ্চ ঘাটে যাত্রী মো. মিলন আহাম্মেদ বলেন, লোকাল বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। গোয়ালন্দ বাজার থেকে পায়ে হেটে লঞ্চ ঘাট আসলাম।
গোপালগঞ্জ থেকে আস যাত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, ভ্যান গাড়ীতে ফেরি ঘাট আসলাম, শিশু সন্তান নিয়ে গরমে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।
নকশীকাঁথা মেইল ট্রেনের পরিচালক ইকবাল হোসেন বলেন, রাত আড়াই টায় খুলনা থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে এসেছি। ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু যাত্রী ট্রেনের ছাদে উঠেছে।
দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ির ওসি সৈয়দ মো.জাকির হোসেন পিপিএম বলেন, ঈদ শেষে মানুষ কর্মস্থলে ফিরছে। আর এই কর্মে ফেরা মানুষ ও যানবাহনের চাপ পড়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে। ফেরি ও লঞ্চ ঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখতে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ, জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। আশা করছি আজকে সন্ধ্যার মধ্যেই ঘাট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যাবস্থাপক (বানিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, এ নৌ রুটে যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ছোট বড় ২১টি ফেরি চলাচল করছে। অতিরিক্ত যানবহন ও যাত্রীর কারনে গাড়ির দীর্ঘ লাইন হয়েছে। তবে যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রাইভেটকার ও যাত্রীবাহী বাস অগ্রাধীকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে।
আবুল হোসেন/এমএম