গোপালগঞ্জঃ ব্যতিক্রমী নকশা ও আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে গোপালগঞ্জে পাঁচ একর জমির উপর নির্মান করা হয়েছে অত্যাধুনিক মানের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ। এ ঈদগাহ ময়দানে একসাথে ৪০ হাজার মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। দুই বছর পর এবারই প্রথম এই ঈদগাহ ময়দানে একসাথে ঈদের নামজ আদায় করবেন পৌরবাসী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরের প্রাণ কেন্দ্রে সার্বজনিন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্যাকেজে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ একর জায়গায় উপর দৃষ্টি নন্দন ঈদগাহটি নির্মাণ করছে এলজিইডি। ঈদগাহের সম্মুখভাগে দৃস্টিনন্দন মেহরব করা হয়েছে যা ঈদগাহের সৌন্দয্য বৃদ্ধি করেছে বহুগুনে। মূল মেহরাবের মেইন অর্চের উচ্চতা ১২.৫৫০ মিটার। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের জন্য মূল গেটসহ রাখা হয়েছে ৪টি প্রবেশ পথ। একসাথে ২০ জনের ওজু করার জন্য ১টি অজুখানা, অফিসরুম, পুরুষ ও মহিলা টয়লেট, প্রসাবখানা, স্টোর রুমসহ মেহেরাবসহ করা হয়েছে আধুনিক সব ব্যবস্থা। ঈদগাহে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য মাঠের চারিদিকে ১৭টি ক্যাচ বেসিনসহ ৪৫৫ মিটার পাইপ লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড় ধরনের বৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরে নামাজ আদায় করা যাবে এ ঈদগাহ ময়দানে।
মহামারি করোনা ও ঈদগাহ উন্নয়নের কারনে গত দুই বছর মুসল্লীরা ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেনি। নতুন এ ঈদগাহ তৈরী হওয়াতে মুসল্লীদের মাঝে ঈদের জামাত ঘিরে রয়েছে বাড়তি আকর্ষন। সেইভাবেই ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। প্যান্ডেল তৈরীসহ পুরোদমে চলছে ঈদগাহের সাজসজ্জার কাজ। নতুন ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭ টায় অনুষ্ঠিত হবে নব নির্মিত কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহ ময়দানে। ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করবেন মাওলানা হাফিজুর রহমান। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় থানাপাড়া জামে মসজিদে এবং তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে গোপালগঞ্জ ছালেহিয়া আলিয়া মাদ্রাসা জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়। তবে, আবহাওয়া প্রতিকুল হলে প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭ টায় কেন্দ্রীয় কোর্ট মসজিদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া পুলিশ লাইন মাঠে আরো একটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা গফফার আলী বলেন, নতুন করে ঈদগাহ নির্মাণের কারনে গত দুই বছর এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারিনি। তবে এবার এখানে সবার সাথে ঈদের নামজ আদায় করতে পারবো বলে খুব খুশি লাগছে।
নবীনবাগ এলাকার সোহেল সিকদার বলেন, করোনা ও নতুন করে ঈদগাহ নির্মাণের কারনে গত দুই বছর ঈদের নামজ পড়তে পারিনি। ব্যতিক্রমী নকশা ও আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে যে ঈদসাহ নির্মান করা হয়েছে এ বছর এখানে সবার সাথে ঈদের নামাজ পড়তে পারবো বলে খুব আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোপালগঞ্জ-০২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ। তাদের কারনে এমন সুন্দর একটি ঈদগাহ পেল পৌরবাসী।
গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, ব্যতিক্রমী নকশা আর আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে পূর্বের স্থানেই সম্পূর্ণ নতুন রূপে পৌর ঈদগাহটি নির্মান করা হয়েছে। এতে শুধু ঈদগাহে জায়গাই বাড়েনি, ঈদগাহটি শহরের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। সেই সাথে সারাবছর ধরে শহরবাসী এখানে এসে প্রশান্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবেন।
সৈয়দ আকবর হোসেন/এমএম