ঢাকাঃ ফুলেল শ্রদ্ধা আর স্বজনদের বাঁধভাঙা কান্না ও আহাজারি মধ্য দিয়েই নবম বর্ষ পূর্তিতে স্মরণ করে রানা প্লাজায় নিহত পোশাক শ্রমিকদের। গেল দুই বছর করোনা মহামারিতে এ দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে পারেননি পোশাক শ্রমিকরা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে থেকে সাভারের বাজার বাসস্ট্যান্ডে রানা প্লাজার অস্থায়ী বেদীতে নিহতের স্বজন, আহত পোশাক শ্রমিক, বিভিন্ন পোশাক শ্রমিক সংগঠন ও নানা-শ্রেণি পেশার মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
এ সময় রানা প্লাজায় নিহতের স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। নানা স্লোগানে রানা প্লাজা ধসে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান পোশাক শ্রমিকরা। এছাড়া আহত ও পঙ্গু ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে সহায়তা, রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণে স্থায়ী বেদীসহ নানা দাবি কথা বলেন নিহতদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও পোশাক শ্রমিক সংগঠনগুলো।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও গার্মেন্টস মালিকদের ফাঁসির দাবি করেন। সেইসঙ্গে দ্রুত নিহতদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানান।
এ সময় শ্রমিক নেতারা বলেন, আমরা কে টি এস স্পেকট্রাম, তাজরিন, স্মার্ট, রানা প্লাজা, আসওয়াদ, ট্যাম্পাকো, হাসেম ফুডস ট্র্যাজেডি আর দেখতে চাই না। কিন্তু শ্রমিকের মৃত্যুর মিছিল চলছেই।
তারা আরও বলেন, এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের স্থায়ী পুনর্বাসন, আহতদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও মানসিক ট্রমা থেকে মুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা প্রয়োজন। তবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবার ন্যায়সঙ্গত ক্ষতিপূরণ পায়নি।
২০১৩ সালে ২৩ এপ্রিল রানা প্লাজা ভবনে ফাটল দেখা দেয়। এ খবর শুনে কারখানা সেদিন ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরের দিন কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগদানে না করতে চাইলেও জোরপূর্বক ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজে যোগদানে বাধ্য করা হয়। এরপরে সকালে ৮.৪৫ মিনিটের দিকে হঠাৎ জেনারেটর চালালে বিকট শব্দে ধসে পড়ে রানা প্লাজার নয়তলা ভবন।
এতে প্রাণ হারান এক হাজার ১৭৫ জন পোশাক শ্রমিক। এ সময় দুই হাজারের বেশি পোশাক শ্রমিক ভবন ধসে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
এমএম