সংগ্রামী নারীর সংগ্রামী সাফল্য সুই সুতায় ভাগ্য বদল

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি এপ্রিল ১৯, ২০২২, ০২:১৫ পিএম

হবিগঞ্জঃ সুইয়ের ফোঁড়ে রঙ-বেরঙের সুতার নকশা কাপড়ে ফুটিয়ে তোলার ঐতিহ্য আমাদের হাজার বছরের। রক্ষণশীল সমাজের নানা কুসংস্কার, নিয়মকানুন ও  প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সুঁচের ফোঁড়ে নিপুণ হাতে তৈরি শাড়ী ও নকশি কাঁথায় ভাগ্য ফিরিয়েছেন সাবানা চৌধুরী। তার হাত ধরে গ্রামের নির্ভৃত পল্লীর অবহেলিত নারীদের নিপুণ হাতে তৈরি নকশি কাঁথা দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। সুই আর সুতার ছন্দময় গতিতে নানা রঙের সুতার বুননে ফুটিয়ে তুলছেন আবহমান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি ও অপরূপ সৌন্দর্যের নকশিকাঁথা। এতে বহু দুঃস্থ, অসহায় ও অভাবী মহিলাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে।

নারী উদ্যোক্তা সাবানা চৌধুরীর বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামে। ওনার সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাধবপুর উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের নূর বক্স মহালদারের মেজো ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার কোলজোড়ে আসে দুটি পুত্র সন্তান, বড় ছেলের বয়স যখন সাড়ে তিন বছর আর ছোট ছেলের বয়স চৌত্রিশ দিন তখন থেকেই তার সংসারে বিচ্ছেদের বাতাস বইতে থাকে। ২সন্তানের বোঝা পরে সাবানার উপর। এরপর সন্তানদের নিয়ে চলে আসেন বাবার বাড়িতে। দিনে দিনে স্বামীর সাথে দুরত্ব বাড়লে আকাশ ভেঙে পড়ে সাবানার মাথায়। কি খাবে, ছেলেদের কি খাওয়াবে সেই দুশ্চিন্তায় কাহিল হয়ে পড়েন সাবানা। একপর্যায়ে তিনি মায়ের উৎসাহ উদ্দীপনায় ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুচী শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে এখন স্বাবলম্বী। বড় ছেলে এশিয়া ইউনিভার্সিটি, আশুলিয়া শাখা ও ছোট ছেলে গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এস,এস,সি পরীক্ষার্থী। তিনি আরো জানান, তার হাত ধরে আশুলিয়া, ঠাকুরগাঁ, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্তে শতাধিক দুঃস্থ, অভাবী ও অসহায় মহিলা সুচী শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আজ এতোদুরে আসার পিছনে সব ছেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আমার মা। সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেলে এই শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়ার কথা ও জানান তিনি।

এরশাদ আলী/এমএম