পাটুরিয়ার  তিন ফেরি মেরামতে, ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি এপ্রিল ১৭, ২০২২, ০৩:৩১ এএম

মানিকগঞ্জঃ সামনে মাত্র সপ্তাহ দুয়েক পর ঈদ। আপনজনদের সাথে ঈদ করতে আগামী সপ্তাহের পর থেকে রাজধানী ছাড়বে মানুষ।  ঢাকার সাথে  দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌরুট। স্বাভাবিক সময়ে  দুই থেকে আড়াই হাজার যানবাহন পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে। তবে ঈদ বা কোন উৎসবে যানবাহনের চাপ আরো বেড়ে যায়। উৎসবগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ায় এমনিতেই যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি বাড়ে। সেই সাথে ফেরি সংকট বা অন্য কোন সমস্যা থাকলে নৌরুট পার হতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের । 

গত বছরের ২৭ অক্টোবর পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে চলাচলরত রো রো ফেরি শাহ আলী নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডে মেরামতে পাঠানো হয়। সাড়ে পাঁচ মাস পার হলেও এ ফেরির মেরামত কাজ শেষ হয়নি। ঈদের সময় যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ফেরিটি নৌরুটে যোগ দেওয়া নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এদিকে গত তিন সপ্তাহ আগে রো রো ফেরি গোলাম মওলা ও ছোট ফেরি শাপলাকেও মেরামতের জন্য নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। ঈদের সময়ে পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরির সংখ্যা কম হলে ভোগান্তির মাত্রা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন সাধারন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকেরা। এদিকে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বাড়তি ফেরি সংযোজনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছে পাটুরিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ। 

কুষ্টিয়াগামী যাত্রী দেবেশ চন্দ্র বলেন, এক যুগ ধরে পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়ে যাতায়াত করি। সারা বছর এ নৌরুটে কোন না কোন সমস্যা লেগে থাকে। স্বাভাবিক সময়গুলোতে ভোগান্তির মাত্রা কম থাকলেও উৎসবগুলোতে বেড়ে যায়। ঈদ উৎসবে ঘাট কর্তৃপক্ষের পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া থাকলেও তা তেমন কাজে আসেনা। কারন যখন ফেরি বাড়ায় তখন দেখা যায় নদীতে তীব্র স্রোতে সময় লাগে বেশি। আবার দেখা যায় স্রোত নাই তবে ভাঙ্গনে পন্টুনে সমস্যা। পন্টুন ভালো তো লোড আনলোডের পকেট নাই। এ রকম আরো সমস্যা থাকতে দেখা দেয়। সকল সমস্যা যদি একসাথে সমন্বয় করে সমাধান করা যায় তাহলে ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ভোগান্তি কিছুটা কমতো। 

পরিবহন চালক রুস্তম মিয়া বলেন, পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে এমনিতেই ফেরি সংকট। শাহ আলী ও গোলাম মওলা এ নৌরুটের বড় ফেরি। শাপলার চেয়ে এ দুটি ফেরিতে বেশি যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের সক্ষমতা বেশি। এই দুটি ফেরি না থাকলে ভোগান্তি বাড়বে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহ আলী ফেরিতে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, শাহ আলী ফেরি মেরামতে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় ধীরগতিতে মেরামত হচ্ছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও জনবল বাড়ানো হয়নি। ফেরি মেরামতে মাত্র দুই জন শ্রমিক কাজ করছে।  ফলে সাড়ে পাঁচ মাসেও এটির মেরামত কাজ শেষ হয়নি। যেভাবে কাজ হচ্ছে ঈদে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ফেরিটি যোগ দিতে পারবেনা। 

পাটুরিয়া ঘাটের ভাসমান কারখানা মধুমতির সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ( ইলেকট্রিক্যাল) হাবিবুর রহমান বলেন, শাহ আলী ফেরিটির ইঞ্জিন জনিত কোন সমস্যা নেই। শুধুমাত্র আউট স্ট্রাকচারের কাজ চলছে। শাপলা ফেরিটিতে ৬/৭ বছর পর্যন্ত ডগিং মেরামত হয়নি। তাই এ ফেরিটি ডগিং মেরামতে রয়েছে। এদিকে গোলাম মওলা ফেরিটি পোর্ট ও ডেপো সাইডে সমস্যা থাকায় মেরামতে রয়েছে। মেরামত শেষে ঈদের আগেই ফেরিগুলো পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে যোগ দিবে বলেও জানান তিনি। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ  বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে এখন ছোট বড় মিলে ১৯ টি ফেরি চলাচল করছে। দ্রুত সময়ে মেরামতে থাকা গোলাম মওলা ও শাপলা যোগ দিবে।

এসএস