মেঘনায় জেলে ও নৌ-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ১০, ২০২২, ০৪:২২ পিএম

লক্ষ্মীপুরঃ জেলার মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার সময় জেলে ও নৌ পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে আমির হোসেন (২৫) নামের এক জেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

নিহত আমির হোসেন ভোলা জেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চর মোহাম্মদ আলী গ্রামের আবদুল মতলব রারির ছেলে।

আজ রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নৌ-পুলিশের চাঁদপুর জোনের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান। এ ঘটনায় ১০ জেলেকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা বর্তমানে ললক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছে।

এর আগে শনিবার রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের সবুজ বয়া এলাকার মেঘনা নদীতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলেন- তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন, মোস্তফা সর্দারের ছেলে মোসলেহ উদ্দিন, আবু কালাম কাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম কাজী, জনু ফরাজীর ছেলে সাইদুল ইসলাম, আলাউদ্দিন জমাদারের ছেলে মোক্তার জমাদার, আলী রারির ছেলে ইমরান হোসেন, জাব্বার রারির ছেলে সবুজ রারী, মুখবুল মাঝির ছেলে সবুজ মাঝি, নিহতের ভাই ও আবদুল মতলব রারির ছেলে কামাল রারি, জলিল মাঝির ছেলে জহিরুল ইসলামসহ ১০ জন জেলে। তারা সবাই ভোলা জেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

নৌ-পুলিশ জানায়, জাটকা সংরক্ষণে মেঘনায় দুই মাস মাছ ধরা বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে শনিবার রাতে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট নৌ-পুলিশের একটি দল নদীতে অভিযানে নামে। রাত ১১টার দিকে ঢহলরত পুলিশ সদস্যরা চর রমনী মোহন ইউনিয়নের সবুজ বয়া এলাকায় মাছ শিকারে মেঘনা নদীতে জেলেদের পাতানো কারেন্ট জাল জব্দ করছিলো। এসময় মাছ ধরার ৫/৬টি নৌকায় করে ৫০/৬০ জন জেলে নৌ পুলিশের নৌকা ঘেরাও করে হামলা চালায়। এসময় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। হামলার সময় জেলেরা নৌ-পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল (জালের কাঠি) নিক্ষেপ করতে থাকে। আত্মরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে জেলে নৌকাদের ধাওয়া করে। এসময় পালাতে গিয়ে একটি নৌকার ১১ জেলে নদীতে পড়ে গেলে, পুলিশ তাদের আটক করলেও বাকী নৌকা গুলো পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলাম, মহসীন, আনোয়ার, মোবারক ও পুলিশের স্পীড বোর্ডের চালকসহ ১১ জেলেও আহত হয়।

তবে এ বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন জেলে ও নৌ-পুলিশ। পুলিশের দাবী অন্ধকারে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের সময় আটকৃত জেলেরা আহত হন। অপরদিকে আটক জেলে ও তাদের পরিবারের দাবী, মাঝি মনির চৌকিধারের নেতৃত্বে একটি নৌকা মাছ শিকারে মেঘনার নদীর ভোলা-লক্ষ্মীপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এলে, নৌ-পুলিশ তাদের লক্ষ করে গুলি চালায়। এসময় জেলে আমির, মনির চকিদার সহ ৪ জন গুলিবৃদ্ধ হয়। দাদনের ঋণের চাপে ও পেটের জালায় মাছ শিকারে নদীতে নেমেছেন বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

রবিউল ইসলাম খান/এমএম