৩৫ ঘণ্টা পর শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার

গাজীপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ৫, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম

গাজীপুরঃ জেলার শ্রীপুরে পুলিশের মারধরের হাত থেকে বাঁচতে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ যুবক মামুনের (২৫) ৩৫ ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মামুন উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা (জেলে পাড়া) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামুনের বড় ভাই মাসুম জানান, মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর কাপাসিয়া উপজেলা এলাকার রায়েদ খেয়াঘাটে এক যুবকের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে মাসুমসহ তার স্বজনেরা ওই খেয়াঘাটে গিয়ে তার ভাই মামুনের লাশ শনাক্ত করে। পরে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

মামুনের বড় ভাই মাসুম নিজেও পাড়ে দাঁড়িয়ে তার ভাইকে মাঝ নদীতে দুই হাত উপরে তুলে বাঁচার চেষ্টা করতে দেখেন বলে জানান।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এএসআই শাকিল আহাম্মদ এর আগেও একাধিকবার তার ভাই মামুনকে আটক করেছে। মামলাও দিয়েছে। এতে মামুনের মনে পুলিশি ভীতি কাজ করতো সবসময়। তাই, সে পুলিশকে দেখে আটকের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল।

প্রসঙ্গত, রবিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল পৌনে চারটার দিকে ইফতার কেনার জন্য দোকানে যাওয়া উদ্দেশ্য মামুন বাড়ি থেকে বের হয়। পথে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) শাকিল আহম্মেদের সাথে তার দেখা হয়। এসময় এএসআই শাকিল আহাম্মদসহ সাদা পোশাকের ২/৩জন পুলিশ তাদের র্সোস রৌশনকে সাথে নিয়ে মামুনকে ধরার চেষ্টা করলে সে দৌড়ে নদীর পাশে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। পুলিশ মামুনকে ধাওয়া করে ধরে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে বাঁচার জন্য মামুন পাশের শৗতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দেয়। সাঁতার কেটে নদী পার হবার সময় মামুন মাঝ নদীতে তলিয়ে যায়। নদীর পাড়ে থাকা স্থানীয়রা মামুনের পানিতে তলিয়ে যাওয়া দেখতে পান। খবর পেয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল ওইদিন রাতে শীতলক্ষ্যা নদীতে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি।

অভিযুক্ত শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাকিল আহাম্মদকে (০১৭১৬-২৭০৩২৩) একাধিকবার ফোন দিলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যা।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানান, সে শ্রীপুর থানার চুরি (২৬(৬)২১) মামলার পলাতক আসামি। ওই এএসআই এর আগেও মামুনকে একই মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল। রবিবার বিকেলে মামুনকে গ্রেপ্তারে পুনরায় অভিযান চালালে সে পুলিশকে দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। লাশ ফুলে যাওয়ায় প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মোক্তার হোসেন/এমএম