কাঁঠালের রাজধানী শ্রীপুরে মুচিতে গাছগুলো ভরপুর

গাজীপুর প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২, ০৩:৩৯ পিএম

গাজীপুরঃ ফল ও ফুলের মাস বসন্ত। প্রকৃতির রূপ সজ্জার এমাসে পরিবেশ ও প্রকৃতি অনিন্দ্য সৌন্দর্য ধারণ করে। ফুল ও ফলে ভরে উঠেছে গাজীপুরেরর শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছপালায়।

কাঠালের উৎপত্তি ভারতীয় উপমহাদেশ হলেও এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠাল গ্রীস্ম মৌসুমের একটি জনপ্রিয় ফল হলেও গাজীপুর জেলার প্রতিটি উপজেলায় গাছে গাছে কাঁঠালের মুচি ধরছে।

গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, কলিয়াকৈর, কালিগঞ্জসহ সকল উপজেলাতে প্রচুর কাঁঠালের মুচি ধরেছে গাছে। মৌমাছির ভনভন শব্দে মুখরিত গাছগুলো।

কাঁঠালের মুচিও কিন্তু সুস্বাদু খাবার। কাঁঠাল কিন্তু তেমন ফেলনা কোন ফল নয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল হলো কাঁঠাল। এর সবই খাওয়া যায়। এছাড়া কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল বা এচোড় তরকারি হিসেবে উপাদেয়।

কাঁঠালে প্রচুর শক্ররা ও ক্যালশিয়াম থাকে। কাঁঠালের বীজও আমাদের খাবারের অন্তর্ভুক্ত। পাকা কাঁঠালে ক্যারোটিন রয়েছে। আপেল, কমলার চাইতে কাঁঠালের খাদ্য মান অনেক বেশী। কাঁঠালে আশঁ, ভিটামিন ‘এ’অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি-৬, ভিটামিন-ই, ক্যালসিয়াম, ফলিক এসিড রয়েছে। টাটকা ফলে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, এবং লোহার (আয়রনের) একটি ভাল উৎস। টাশিয়াম হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁঠালের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে তিন ধরণের কাঁঠাল চাষ হয় বাংলাদেশে-খাজা, আদারসা ও গালা। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ২টি জাত- বারি কাঁঠাল-১ (২০০৮) এবং বারি কাঁঠাল-২ (২০১০) রিলিজ করলে এখনো প্রসার ঘটেনি। কৃষিবিজ্ঞানীরা কাঁঠালকে মাল্টিপারপাস উদ্ভিদ বলে থাকেন, কারন- ফল হিসেবে পাকা অবস্থায়, সবজি/তরকারী হিসেবে কাঁচা অবস্থায় কাঁঠাল খুব সুস্বাদু খাবার। এছাড়া এ ফলটির অবশিষ্ঠাংশ পশু খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার হয়।

এছাড়া গ্রামের মেয়েরা কচি কাঁঠালের(মুচি) অপুক্ত কাঁঠাল খোঁসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে সাথে তেঁতুল দিয়ে ভর্তা করে খায়। কাঁঠালের বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাবার। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই ফল খুবই কার্যকরী। তাছাড়া মৌসুম ভিত্তিক এই ফল সবাই খেতে পারেন। তবে গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মায়ের যেহেতু আয়রন ও ক্যালসিয়াম, ভিটামিন‘এ, ভিটামিন-বি, ঘাটতি দেখা দেয়। সেই কারণে এই সময়ে মায়েরা বেশি পরিমানে কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খেয়ে আয়রনে ঘাটতি পূরণ করতে পারেন অতি সহজেই।

পাকা কাঁঠালে প্রচুর আঁশ রয়েছে ফলে পাকা কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন। কাঁঠালের পাতা পশু খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার হয়। পাতা ছাগলের প্রিয় খাবার আর মোথা গরুর। (ছাগলের প্রাধান খাদ্য)। কাঁঠাল কাঠ দিয়ে নানা ধরণের ফার্ণিচার তৈরি করা হয়। যেমন খাট, ওয়াটড্রপ, আলনা, সোফা, ঘরের দরজা, ইত্যাদী। কাঁঠাল নিয়ে অনেক বচন রয়েছে যেমন- গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল-কিলাইলে কি কাঁঠাল পাকে? -কাঁঠালের আম সত্ত -“দোলেরে দোলে কাঁঠাল খাইয়ে ফোলে”ইত্যাদি।

 

আগামীনিউজ/এমবুইউ