নেত্রকোণা সদর আ.লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ভিপি শাহীন

নেত্রকোণা প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২, ০২:২৭ পিএম

নেত্রকোণাঃ আসন্ন ১মার্চ নেত্রকোণা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর আদর্শের ধারক-বাহক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড নব্বই দশক ও বিংশ শতাব্দীর রাজপথ কাপাঁনো সাহসী, সংগ্রামী-তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা শাহীন উদ্দীন আহমেদ ভিপি শাহীন (এমএ-এলএলবি)।

নেত্রকোণা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী শাহীন উদ্দীন আহমেদ ভিপি শাহীনের রাজনীতিতে রয়েছে, ১৯৮৯সালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘকাল সময়ের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের একনিষ্ঠ সহচর আওয়ামী রাজনীতির সিংহ পুরুষ হিসেবে খ্যাত, ভাষা সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক এমপি জননেতা মরহুম অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান খান-এঁর নির্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৯৪-১৯৯৫ সেশনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত নেত্রকোণা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ভিপি নির্বাচিত হোন। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এনামূল হক শামীম সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী খান পান্না এবং নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রশান্ত কুমার রায় সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান খান নোমান দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে দীর্ঘকাল সময় দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। তখনকার সময়ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এনামূল হক শামীম সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী খান পান্না ছিলেন। এরপর ভিপি শাহীন নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য মনোনীত হোন। এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধারাবাহিকভাবে সভাপতি এনামূল হক শামীম সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী খান পান্না, সভাপতি বাহাদুর বেপারী সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন, সভাপতি লিয়াকত সিকদার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৮-২০১৪ সালের মেয়াদে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের নেত্রকোণা জেলা শাখার সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেত্রকোণা পৌর শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক পদে দায়িত্বেও ছিলেন। ঐসময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোতাহার হোসেন মোল্লাহ্ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রোজা এর সময়কালীন নেত্রকোণা জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির জাতীয় পরিষদ সদস্য। আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির নেত্রকোণা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও সভাপতি আদর্শ সমাজ হিতৈষী সমিতি নেত্রকোণা, সভাপতি জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন নেত্রকোণা, সাধারণ সম্পাদক আমরা জীবনমূখী নেত্রকোণা, সাবেক পরিচালক কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিঃ নেত্রকোণা, উদ্যোক্তা উন্মেষ উ”চ বিদ্যালয় নেত্রকোণা, উপদেষ্টা মানবাধিকার সমাজ কল্যাণ সংঘ্য, নেত্রকোণা, সহ-সভাপতি ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতি পরিষদ নেত্রকোণা জেলা শাখা, সহ-সভাপতি ভাটি বাংলা কৃষি উন্নয়ন পরিষদ নেত্রকোণা, সদস্য কারলী সমবায় সমিতি লিঃ নেত্রকোণা, সদস্য রৌহা বহুমূখী সমবায় সমিতি লিঃ নেত্রকোণা।

আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ভিপি শাহীনের কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে, ১৯৮৯ সনে স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার রায়ের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন। স্বৈরচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার গ্রš’না ও প্রকাশনা সম্পাদক শহীদ শাহীনূর ইসলাম তিতাস হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে সভা-সমাবেশ, হরতাল, অবরোধ এবং ডিসি অফিস ঘেরাও কর্মসূচী সহ জেলা ব্যাপী দূর্বার আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৫সনে বিএনপি বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে সার সংকটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষকলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার সভাপতি কেশব রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে ভিপি শাহীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে থেকে দূর্বার কৃষক আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৬সনে খালেদা জিয়া সরকারের ভোটার বিহীন ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রহসন মূলক নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার সভাপতি স্বপন জোয়ারদারের নেতৃত্বে ভিপি শাহীন সংগ্রামী ও সাহসী ভূমিকা পালন করেন। ২০০১সনে জামাত বিএনপি জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার সাহসী ও বিপ্লবী সভাপতি শহীদ স্বপন জোয়ারদারের হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে সভা-সমাবেশ, হরতাল, অবরোধ সহ মাসব্যাপী রাজপথ কাঁপানো কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেন।

রাজনীতিতে ভিপি শাহীন বিভিন্ন সময় নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন বলে জানান, ১৯৮৯সনে স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশী হয়রানীর শিকার হোন। ১৯৯১-১৯৯৬সনের ১২ই জুনের পূর্ববর্তী পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অবৈধ কর্মকান্ডের বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য মিথ্যা মামলার আসামী হোন। ২০০১-২০০৬সনে বিএনপি-জামাত চার দলীয় ঐক্যজোট সরকারের আমলে নেত্রকোণা জেলার জামাত-বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ভিপি শাহীনকে প্রতিনিয়ত এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে বলে জানান। সেই সঙ্গে তৎকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সৃষ্টি বাহিনী ভিপি শাহীনকে অপারেশন ক্লিন হার্ট, ক্রশ ফয়ার দেয়ার ষড়যন্ত্র সহ বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসী বাহিনীরা হত্যার চেষ্টা করে বলে জানান শাহীন উদ্দীন আহমেদ ভিপি শাহীন। তিনি আরো জানান, ঐজোট সরকারের আমলে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটিয়েছেন এবং এই নেত্রকোণা জেলা সহ অন্য জেলার অসংখ্য বাড়ী-ঘরে ফেরারী জীবন-ঝাপন করেছেন।

অস্বাভাবিক কষ্ঠের মধ্যে দিয়ে দিন পার করেছেন। ২০০৭সনে তথাকথিত ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দীনের অবৈধ ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তখনকার সময়ের বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান সরকারের বার-বারের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এমপিকে মিথ্যা অভিযোগে অবৈধ গ্রেফতারের পরপরেই নেত্রকোণায় নেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির জন্য তৎকালীন আওয়ামী যুবলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার সাহসী ও বিপ্লবী আহ্বায়ক অধ্যাপক ওমর ফারুকের নেতৃত্বে আপামর জনগণের দুই লাখ গণস্বাক্ষর কেন্দ্রে প্রেরণ সহ রাজপথ কাপাঁনো দূর্বার আন্দোলন-সংগ্রাম করেন।
আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ভিপি শাহীনের পরিবারের সদস্যদের ইতিহাস জানান, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা-বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইসমাঈল উদ্দীন আহমেদ ছাত্র জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা মহকুমা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইসমাঈল উদ্দীন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে আইয়ূব বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হোন। ভাষা আন্দোলন-সংগ্রামে তার বাবার ভূমিকা ছিলো। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার গ্রামের বাড়ী-ঘর ভাংচুর সহ লুটপাঠ করে নিয়ে যায় রাজাকার,আল-বদর, শান্তি কমিটির সদস্যরা এমনকি তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাঈল উদ্দীন আহমেদ কে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য রাজাকার,শান্তি কমিটির সদস্যদের কথায় পাক-হানাদার বাহিনীরা গুলি চালালে তার বাবার বন্ধু তাদের বসত ঘরে অবস্থান করছিলেন, সেই শহীদ নূরু মিয়া গুলি বিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

ভিপি শাহীনের মা মরহুমা নাসিমা আক্তার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা মহিলা আওয়ামীলীগে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মরহুমা নাসিমা আক্তার মমতাময়ী মাতৃত্ব ও বোনের মতো সর্বমহলেই সম্মান করতো বলে নেত্রকোণা জেলায় মহিয়সী নারী নেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ভিপি শাহীনের ছোট ভাই শফিউদ্দীন আহমেদ সাগর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেত্রকোণা জেলা শাখায় সকলের প্রিয় ছাত্রলীগ নেতা ছিলো।

আগামীনিউজ/এমবুইউ