বেতাগীতে ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে বিস্তর অভিযোগ

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২, ০৩:৩৮ পিএম

বরগুনাঃ জেলার বেতাগীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে একাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যরা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে ইচ্ছেমত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ফলে নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই দেওয়াল ভেঙে পড়ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় এ উপজেলায় ৯ জন জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে প্রধধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে বীর নিবাস নির্মাণের জন্য ১২ কোটি ৬৯ লক্ষ ৩ হাজার ৪৩৮ টাকা বরাদ্ধ দেয়। যার প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা।

জানা গেছে, উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মেসার্স নাসির আহমেদ ঠিকাদার নির্বাচিত হণ। পরে বেতাগী উপজেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাসির এন্টারপ্রাইজ যার প্রোপাইটর তরিকুল ইসলাম নাসির কাজটি ক্রয় করে কার্যাদেশ পাওয়ার পর ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর বীর নিবাস ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করে। শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিডিউল মোতাবেক কাজ না করে নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে কাজ করছে এবং পরিমাণ মত সিমেন্ট ও লোহার রড দিচ্ছেনা বলে আভিযোগ  বীর নিবাস পাওয়া একাধিক পরিবার গুলোর।

বীর নিবাস পাওয়া পরিবারের সদস্যরা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাদের ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 

বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম ফারুক শিকদার অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে আমরা খুশি। কিন্ত বীর নিবাস নির্মাণে ঠিাকাদার  নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছেন। আমি নিষেধ করার পরেও ঠিকাদার কিছুতেই শুনছেন না। 

সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা খবির উদ্দীনের ছেলে বেলাল সিকদার বলেন,‘আমার বাবা তাঁর নিজের জীবণবাজী রেখে দেশ হানাদার মুক্ত করছেন। সেই বীর পুরষদের ঘরের কাজের মান এতটাই নিম্নমানের হয়। যার ফলে বীর নিবাসের তৈরিকৃত দেয়াল নির্মাণ কাজ শেষে হতে না হতেই ভেঙে পড়ে।

এ বিষয়ে ঠিকাদার তরিকুল ইসলাম নাসির মুঠোফোনে বলেন, 'আমি সরকারি শিডিউলমত কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কাজও শেষ পর্যায়, কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তবে ঢালাও ভাবে  যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।'

এ বিষয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জিএম ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, সঠিকভাবে কাজ না করলে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার এবং মুক্তিযোদ্ধা ফারুক সিকদারের ইট পরিবর্তন করে লাগানোর কথা বলেছি।  

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে কোন ধরনের অনিয়মের সূযোগ নেই। খবর পাওয়ার পর সরেজমিনে গিয়ে ঠিকাদারকে ডেকে প্রাক্কলণ অনুযায়ী ঠিকাদারকে কাজ  করার নির্দেশ দিয়েছি। 
 

আগামীনিউজ/এমবুইউ