নীলফামারীর পুনর্খননকৃত চাড়ালকাঠা নদীতে নাব্যতা না থাকায় ফসলের সমারোহ

উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৩:০২ পিএম

নীলফামারীঃ কিশোরগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের প্রবল খড়শ্রোতা চাড়ালকাটা নদীতো চাষাবাদ শুরু হয়েছে। নদীর বুকে ফসলের সমারোহ। ধান, চাল, আলু আবাদ হচ্ছে। নাব্যতা না থাকায় নদীটি ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। গত বছর নদীটির প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পাউবো সৈয়দপুর পওর বিভাগ পুনর্খনন করেছিল। ফলে এলাকার মানুষের মাঝে জেগে উঠেছিল আশার আলো। 

অসময়ের গত বন্যা নদীপাড়ের মানুষের সেই আশার আলো নিভিয়ে দিয়েছে। নদীর খননকৃত বালু মাটি পাড়ে স্তুপ করে রাখায় তা সহজে বন্যার তাড়ে ফের নদীতে গিয়ে পড়ে। এর ফলে নদীটি নাব্যতা হারায়।

কথা হয় নদীপাড়ের বাসিন্দা মো. এলাহী, কুদ্দুস, শরাফত, জাহেদা, কুলসুম, আনোয়ারের সঙ্গে। তারা আক্ষেপ করে বলেন, প্রবাহমান এই নদীটিকে ঘিরে আমাদের জীবন জীবিকা চলতো। বছর দশেক আগেও নদীত শুষ্ক মওসুমে ৩/৪ ফুট পানি থাকতো। নানা ধরনের দেশি মাছ মিলতো। এই নদীতে মাছ শিকার করে শত শত মানুষের জীবিকা নির্বাহ হতো। কিন্তু নাব্যতা না থাকায় মাঘ মাসেই নদীতে পানি থাকেনা। দেশি মাছও মিলে না। আগে বারোমাস নদীতে পানি থাকার ফলে দেশি মাছের প্রজনন হতো। বর্ষা শুরু হলেই ওইসব মাছের ডিম থেকে প্রচুর পোনা মাছের জন্ম হতো। এতে করে বর্ষার শেষে নদীতে মিলতাদো আশানুরুপ মাছ। যা দিয়ে অনেকাংশ নদী পাড়ের মানুষের আমিষের চাহিদা মিটতো। ওইসব মানুষের মতো নদীর নাব্যতা সৃষ্টি করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুনর্খননের যে উদ্যোগ নিয়েছিল তা অনেকটাই সুখানদে পরিণত হয়। কিন্তু উঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঠিক মনিটরিং না থাকায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে এক বন্যার তাড়ে। বিশেষ করে নদী তীরে ট্রি প্লানটেশন না করায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে গেছে। তাদের মতে নদীর খননকৃত বালু মাটি নিরাপদ দূরত্ব স্তুপ করে রাখলে এতে দ্রুত নদী ভরাট হতোনা। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় এলাকার প্রভাবশালীরা নদী দখল নিয়ে ধান, গম, আলু, কলার চাষ করে লাভবান হচ্ছে। আর সুবিধাবঞ্চিত মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে বঞ্চিত থাকছে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আগামীনিউজ/এমবুইউ