চুয়াডাঙ্গাঃ জেলার আলমডাঙ্গায় নুডলস ও নারিকেল তেল চুরির অপবাদে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে সাদ্দাম হোসেন (২২) নামে এক যুবককে নির্যাতন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার হাফিজ মোড়ে শেখ ট্রেডার্সে এ ঘটনা ঘটে।
ওই যুবকের নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাদ্দামকে উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ। সাদ্দাম হোসেন আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার থানাপাড়ার আকমল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সুতাইল গ্রামের আমানুল্লাহ দীর্ঘদিন আলমডাঙ্গা শহরের হাফিজ মোড়ে মুদিখানার ব্যবসা করে আসছেন। মঙ্গলবার উপজেলা শহরের রাধিকাগঞ্জের এক শিশু আমানুল্লার দোকান থেকে দুই প্যাকেট নুডলস চুরি করে বলে অভিযোগ ওঠে। চুরির অভিযোগে দোকান মালিক আমানুল্লাহ বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে ওই কিশোরকে মারধর করে।
স্থানীয়রা বলেন, যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন এভাবে দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা আইনের লঙ্ঘন। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা আমানুল্লাহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর দাবি, বিভিন্ন সময় আমার প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটতো। কিছুতেই চোর ধরতে পারছিলাম না। দুপুরে নারিকেল তেল ও নুডসলের প্যাকেট চুরির সময় হাতেনাতে ওই কিশোর ধরা পড়ে। তবে তাকে খুঁটিতে বেধে মারধর করা ঠিক হয়নি।
আলমডাঙ্গা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কমিশনার খন্দকার মুজিবুল ইসলাম বলেন, সাদ্দামের বিরুদ্ধে অনেক চুরির অভিযোগ আছে। আগেও ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন মালামাল চুরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আজ দুপুরে চুরির সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে সাদ্দামকে আমানুল্লাহর কাছে হস্তান্তর করে। পরে সে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করেছে বলে শুনেছি।
তিনি আরও বলেন, এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি তার। বিষয়টি অন্যায় হয়েছে। মারধর না করে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল।
চুয়াডাঙ্গা মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার বলেন, দোকানের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে এটা বড় অপরাধের মধ্যে পড়ে। কেউ আইন নিজ হাতে তুলে নিতে পারেন না। তাকে অবশ্যই আইনের কাছে সোর্পদ করতে হবে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বা তার পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে মানবতা ফাউন্ডেশন থেকে তাকে বিনা মূল্যে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে সাদ্দামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নির্যানতের বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। পরে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও দেখেছি। চুরির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি থানায়। নির্যাতনের ঘটনায় সাদ্দাম বা তার পরিবার অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। রাতেই শেখ আমানুল্লাহকে পুলিশ জিজ্ঞাসাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়েছে।
আগামীনিউজ/বুরহান