জনবল সংকটে ১২ বছর ধরে  স্টেশন বন্ধ, দুর্ভোগে ২৫ গ্রামের মানুষ

গাজীপুর প্রতিনিধি   ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২, ০৪:৫১ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

গাজীপুরঃ দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় একদিকে রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন রুট। সংযোজন হচ্ছে ইঞ্জিন, কোচ।  অন্যদিকে কারিগরি জনবল সংকটে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রেলস্টেশন। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার  প্রাচীনতম  রেলওয়ে স্টেশন ইজ্জতপুর।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা -ময়মনসিংহ রোডের  ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশনটি তীব্র জনবল–সংকটে পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ বন্ধ থাকায় এটি এখন   বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় ১ যুগ আগে হঠাৎ করেই ইজ্জতপুর রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।এভাবে স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে রেলস্টেশনের পয়েন্টস ও স্টেশন–সংলগ্ন লেভেল ক্রসিং গেটগুলো। এতে রেলযাত্রী ও সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত   ঝুঁকি বেড়েই চলছে । স্টেশন বন্ধ হওয়ায়  ওই এলাকার ট্রেনযাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দীর্ঘ ১টি যুগ ধরে । স্টেশনটি বন্ধ থাকায়  অযত্নে ও অবহেলায় স্থাপনা গুলি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে মাধক সেবিদের আড্ডায় পরিনত হয়েছে ঘরগুলো।দীর্ঘদিন স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চুরি হচ্ছে রেলওয়ে মূল্যবান সম্পদ। এক সময়  ৩টি লোকাল ট্রেন যাত্রা বিরতি করত এ স্টেশনে। কিন্তু গত ১২ বছর ধরে কোন ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করছেনা। জনবল সংকটে দীর্ঘদিন স্টেশনটি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে এলাকার লক্ষাধিক  মানুষ। বন্ধ  স্টেশন চালুর দাবীতে কতৃপক্ষের কাছে  একাধিক বার  মানব বন্ধনসহ লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয়রা। স্টেশনটি চালু হলে কম সময় ও অল্প খরচে জেলা শহর এবং রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়েত আরো সহজ হতো এলাবাসীর । দ্রুত সমস্যা দূর করে পুনরায় স্টেশনটি চালুর কথা জানিয়েছেন গাজীপুর -৩ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসনে সবুজ । স্টেশনটি চালু হলে আশপাশের ২৫-৩০ টি গ্রামের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করবেন।একই সাথে চরম ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে ওই এলাকার ৩০ টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। 

গাজীপুরের প্রাচীনতম ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশন ফের চালুর দাবিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রেলপথ অবরোধ করে একাধিক বার  মানববন্ধন করেছেন।  অবহেলায় অযত্নে গুরুত্ব হারাচ্ছে স্টেশনটি। স্থাপনা গুলি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে এটি মাদক সেবিদের আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে ।১৯৬৫ সাল তদকালিন পূর্ব পাকিস্থান সরকারের আমলে এ স্টেশন চালু হয়। সে সময় এই এলাকায় অন্যকোন চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না পায়ে হেটে রাজধানী ও জেলার সাথে যোগাযোগ করতে হতো। ট্রেনই ছিল একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। বর্তমানেও জেলা শহর অথবা রাজধানীর সাথে যোগাযোগ করতে হলে কোন যায়গায় ৫ কিলোমিটার কোন জায়গায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা অটোরিকসা অথবা পায়ে হেটে বাসের রাস্তায় যেতে হয়। গত ১২ বছর আগে এ স্টেশনে ৩ টি লোকাল ট্রেন যাত্রা বিরতি করতো  । বর্তমানে এ স্টেশনে  কোন ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করেনা। প্রায় ২ যুগের বেশী সময় ধরে ইজ্জতপুর রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ থাকায় এটি  এখন  অচল হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী রেলমন্ত্রী ও উন্নয়নের রুপকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে স্টেশনটি মেরামত করে দ্রুত চালুর দাবী জানান।স্টেশনটি চালু থাকলে কম সময়ে জেলা শহর এবং রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সহজে অল্প খরচে রেলের মাধ্যমে যাতায়ত করা যায়, এই এলাকার ব্যবসাযীদেও মাল আনা নেওয়ার এক মাত্র রাস্তা ছিল রেলপথ। কিন্তু বাসে মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় তাতে মুল্যবান সময় নষ্ট হয়। দায়িত্ব প্রাপ্ত  জয়দেবপুর স্টেশন মাস্টার হারুন অর রশিদ  জানান ইজ্জতপুর স্টেশনটি দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রয়েছে জনবল সংকট, সরকার জনবল নিয়োগ দেয়া শুরু করেছে নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে পরে তাছাড়া ডাবল লাইনের কাজ চলছে লাইনের কাজ হয়ে গেলে ইজ্জতপুর স্টেশনটি চালু হয়ে যাবে বলে জানান।এলাকাবাসি সমস্যার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য এরই মাঝে স্টেশনটি চালু করাতে রেল মন্ত্রনালয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি আশা করছেন জনবল নিয়োগ করেও অন্যান্য সমস্যা সমাধান করে অচিরেই এই আবারো চালু করা হবে এই স্টেশনটি।গাজীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন আশপাশের ২৫-৩০ টি গ্রামের মানুষ জেলা শহর ও রাজধানীর সাথে সহজ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল এ স্টেশনটি। ফলে সহজ ও নিরাপদ যাত্রা বিঘ্নিত হয়ে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিন্দুবাড়ী ইজ্জতপুরসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ মিলে প্রায় পৌনে ৪০০ এলাকাবাসীর স্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত আবেদন রেলওয়ের মহাপরিচালক বরাবর জমা দেন তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না এ নিয়ে জনমনে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

আগামীনিউজ/এসএস