শরীয়তপুরঃ সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগাদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলাকারীরা চারটি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাকে আগুন দেয়। আরেকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে পানিতে ফেলে দিয়েছে।
এ সময় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন, কনস্টেবল মো. শরীফুজ্জামান ও মো. মামুন আহত হন। অভিযোগ উঠেছে পরাজিত সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছেন।
এ ঘটনায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থী দলিলউদ্দিন ধলু মাদবর (ঘুড়ি) ও আজিবর রহমান নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচজন প্রার্থী ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বগাদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ইমাম হোসেন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন। সদস্য প্রার্থীদের ফলাফল ঘোষণা শেষ হলে কেন্দ্রের বাইরে থাকা পরাজিত প্রার্থীদের সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র লক্ষ্য করে ইটপাটকেল, লাঠিসোটা ও ককটেল বিস্ফোরণ করেন। হামলাকারীরা ভোটকেন্দ্রের মাঠে থাকা পুলিশের দুটি, সহকারি প্রিসাইডিং অফিসারদের দুটি মোটরসাইরকেল ও ভোটের মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তারা আরেকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে পানিতে ফেলে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাফি বিন কবির পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি নিয়ে হামলাকারিদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সদরে নিয়ে আসেন ও ভোটের মালামাল উদ্ধার করে টাউন চিকন্দি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
প্রিসাইডিং অফিসার ইমাম হোসেন বলেন, ইভিএমে ভোট নেয়া হয়েছে। ভোট শেষে ফলাফলের প্রিন্ট কপি প্রার্থীদের এজেন্টের কাছে দেয়া হয় এবং ওই ফলাফল ঘোষনা করা হয়। ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে একদল দুর্বৃত্ত ভোট কেন্দ্র লক্ষ্য করে ককটেল বোমার বিস্ফোরন ঘটাতে থাকে। তারা ৪টি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাক আগুন দিয়ে পুরে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ও নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে গুলি ছোড়ার নির্দেশ দিই। পরে বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা আমাদের উদ্ধার করেন।
আহত কনস্টেবল মো. শরীফুজ্জামান বলেন, মোরগ মার্কার প্রার্থী সেলিম সরদার বিজয়ী হয়ে কেন্দ্রের মাঠ থেকে মিছিল নিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা প্রথমে ইটপাটকেল, লাঠিসোটা মারতে থাকে। পরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন। তখন আমরা তিনজন আহত হই। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্যার, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি আমাদের উদ্ধার করেন।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আক্তার হোসেন বলেন, চিকন্দি ইউপির তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থী হাফিজ উদ্দিনের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার পর থেকে হাফিজ খান পলাতক। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দুজন আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া আটক করার জন্য অন্য হামলাকারীদের খোঁজা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আগামীনিউজ/এসএস