রংপুরঃ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, অনিয়মের স্বর্গরাজ্য এখন রংপুর সিটি বাজার। যেখানে নিয়ম নিতীর বালাই নেই। অনিয়মের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। এসব অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। এসব অনিয়ম বন্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে। উন্নয়নের দাবী নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারী দোকান বন্ধ রেখে হরতাল পালন করেছিল সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও ব্যবসায়ীরা।নগরীর সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ৫ দফার দাবি অযৌক্তিত এবং সকাল সন্ধ্যা হরতালের স্বপক্ষে মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে সাধারণ ব্যবসায়ী ও রংপুরবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন রংপুর সিটি কর্পোরেশন। ব্যবসায়ী সমিতি ভুলতথ্য উপস্থাপন করায় এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা সংবাদ সম্মেলন করে এসব মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪.১৬ একর জমির উপরে সিটি বাজার প্রতিষ্ঠিত। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে ১ হাজার ১ শ ১২ টি দোকান রয়েছে। ঐসব শ্রেণীভেদে যার ভাড়া মাত্র ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ৬৭৫ টাকা পর্যন্ত ভাড়া পায় সিটি কর্পোরেশন। নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত এই বাজারের দোকানগুলোর ভাড়া এত কম যা সত্যি অবিশ্বাস্য।
এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থবছরে সিটি বাজার, সিটি বাজার সাইকেল স্টান্ড ও গণ শৌচাগার ইজারা হতে আয় প্রায় ২ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। এর বিপরিতে কঞ্জারভেন্সি শাখা, বিদ্যুৎ শাখা ও প্রকৌশল শাখা হতে উন্নয়নমুলক কাজে মোট ব্যয় প্রায় ২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা। যা ব্যয়ের হার ১১৭.৩৮ ভাগ। যেখানে সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের পরিমান মাত্র ৪৫ শতাংশ। তা সত্বেও সিটি বাজার উন্নয়নে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। গণসৌচাগার নির্মাণের কাজ শুরু হলে সমিতির নেতৃবৃন্দ নকশা মনঃপুত হয়নি বলে অত্র সমিতি কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের দাবী অনুয়ায়ী নতুন নকশায় কাজ চলমান রয়েছে। যার ব্যয় ৬৩ লক্ষ টাকা। এছাড়া পার্কিং, গেট ছাড়াও পানি নিস্কাশনের জন্য ৮৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ড্রেন ও ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকায় ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে।
এতকিছু সুবিধার দেয়ার পরেও সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমুলকভাবে হরতাল পালন করে অর্বাচিনের মতো বক্তব্য রেখেছে। যা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে হতবাক করেছে। তিনি আরো বলেন, সিটি বাজার ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান ভাড়া পরিশোধ করে সেই মান্ধাত্তার আমলের হিসেবে। সেটাও কয়েক লক্ষ টাকা বাকী রয়েছে। এছাড়াও সমিতির নেতৃবৃন্দ অবৈধভাবে দোকানের সামনে দোকান বসিয়ে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছেন। সেই দোকানগুলো বাজারের ক্রেতা সাধারণের জন্য চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। অচিরেই জেলা প্রশাসনের সহেযাগিতা নিয়ে এই অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ক্রেতা সাধারণের জন্য চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। রংপুর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র আলহাজ্ব মোঃ মাহামুদুর রহমান টিটু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমীন মিঞা, সচিব উম্মে ফাতেমা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন, প্রধান হিসেব রক্ষক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, সংশ্লিষ্ট ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেকেন্দার আলী, ২০ নং ওয়র্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মাহাবুবর রহমান মঞ্জু, ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুনতাছীর শামীম লাইকো, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায়, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজু, রংপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ মাহবুব রহমান হাবু, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, আফতাব হোসেন, নজরুল মৃর্ধা জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও অন্যান্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আগামীনিউজ/এসএস