স্থানীয় রাজনীতিতে রূপা হয়ে উঠেছিলেন জাদুময় রূপার কাঠি

দেওয়ান পলাশ, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৪:৫৭ পিএম
মাহবুবা নাসরীন রূপা। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়াঃ মাত্র ২৭ বছর বয়সেই দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মাহবুবা নাসরিন রূপা। ঢাকায় পড়াশুনা ও বেড়ে ওঠার কারনে এলাকায় ছিলেন অপরিচিত। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুপচাঁচিয়া -আদমদীঘি আসনে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে ছাত্রলীগ গঠিত প্রচার অভিযান টিমে ঢাকা থেকে এসে অংশ নিয়ে ক্ষীন পরিচিতি পান তিনি। এরপর  ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদের পরিচিতি সামনে তুলে ধরে এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মিদের সমর্থন নিয়ে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত দুপচাঁচিয়া  উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে ক্যারিশমাটিকভাবে বিজয় লাভ করেন মাহবুবা নাসরিন রূপা।

এরপর মাহবুবা নাসরিন রূপা দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিবর্গের সাথে তোলা ছবি ফেসবুকে আপলোড করায় অনেকে মাহবুবা নাসরিন রূপা কে ক্ষমতাধর হিসাবে মনে করতেন। স্থানীয়ভাবে বিভাজনের রাজনীতিতে একটি অংশের কাছে তিনি হয়ে উঠেন জাদুময় রূপার কাঠি। পরবর্তিতে অকল্পনীয়ভাবে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বনে যান এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত  আংশিক কমিটিতেও পদ পান সদস্য হিসাবে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব আর বিভাজনের রাজনীতিতে তিনি সবসময় চেষ্টা করতেন নিজস্ব বলয় গড়ার। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিজস্ব বলয়ের বাইরের ব্যক্তিদের আক্রমন করে বক্তব্য দিতেন মাহবুবা নাসরিন রূপা। 'ধানাই-পানাই চলবে না, পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে' প্রভূতি বাক্য ব্যবহার করে হুমকিমূলক বক্তব্যে প্রদানের জন্য দলের ভিতর-বাইরে সমালোচিতও ছিলেন তিনি।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর  ছাত্রত্ব শেষ হলেও ইডেন কলেজের হলে সিট বানিজ্যে করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুগ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় জাতীয়ভাবে গণমাধ্যমের শিরোনাম হন মাহবুবা নাসরিন রূপা।

মাহবুবা নাসরিন রূপার জন্মভূমি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভূঁইপুর গ্রামের বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাহবুবা নাসরিন রূপার পিতা মরহুম আতাউর রহমান ছিলেন দারিদ্রপীড়িত লোক। দারিদ্রতার কারনে তার স্ত্রী, এক পুত্র ও দুই কন্যা কে নিয়ে প্রায় পঁচিশ বছর আগে ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। জীবিতকালে আতাউর রহমান গার্ডের ( প্রহরী) চাকুরী করে সেখানে জীবিকা অর্জন করতেন।

১৯৯১ সালে জন্ম নেওয়া মাহবুবা নাসরিন রূপা ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন বলে জানা গেছে।

প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকায় গ্রেফতারের পর দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রূপার ভাগ্যে জুটেছে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি।

আগামীনিউজ/এসএস