রংপুরঃ দীর্ঘ সময়ে দাবি জানিয়েও সেতু না মিলায় গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে বানান বাশেঁর সাঁকো।অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই সেই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে ১২ গ্রামের প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ।
এদিকে এলাকাবাসীর চাঁদায় বানানো এ সাঁকোটি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পারাপার করা গেলেও,বর্ষাকালে তা ডুবে যায়। তখন নৌকা বা কলার ভেলাই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।এতে সেতু না থাকার বিরূপ প্রভাব পড়েছে এলাকার কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায়।
এই বাঁশের সাঁকোর অবস্থান রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের যমুনেশ্বরী নদীর কালারঘাট এলাকায়। ঘাটের দুই পাড়ে শাহপাড়া, কাংলাচড়া, উজিয়াল, চারআনী, দোলাপাড়া, বুড়িরহাট, চিলাপাক, চাকলাসহ রয়েছে ১২টি গ্রাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কালারঘাট গ্রাম। ওই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনেশ্বরী নদী। নদীর কালারঘাট খেয়াঘাটেপারাপারের জন্য চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো করেছে স্থানীয়রা।
বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় কথা হয় দোলাপাড়া এলাকার আমিনুর মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন,' ভোট নাগলে চেয়ারম্যান,মেম্বার সবায় আইসা কয় এবার এটে কোনা ব্রীজ হইবে।কোনটে সে ব্রীজ....! হামার ছইল গুলাও বর্ষার সময় নদী পাড় হওয়ার ভয়ে স্কুলেও যায় না'।
চিলাপাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মমিন ইসলাম বলেন,' নদীতে পানি বেড়ে গেলে সাঁকো পাড় হতে আমাদের ভয় লাগে।আর সাঁকো যখন পানিতে ডুবে যায় তখন আর আমাদের স্কুলে যাওয়া যায় না'।
শাহপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছোবেরা বেগম বলেন,' বাপ-দাদারা গেইছে, হামাকও বাঁশের সাঁকো আর কলার ভেলাত পারাপার করি জীবন শেষ করির নাগবে। তাও এটে কোনা সেতু হবার নেয়।আর বর্ষার সময় রোগী পার করতে করতে তো রোগী মরি যাইবে বাহে্'।
সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট বলেন, ‘কালারঘাটে একটি সেতু ১২ গ্রামের ১৬ হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়া।এখানে হাজারো মানুষ দাবি করেও একটি সেতু পাচ্ছে না, এটি খুবই দুঃখজনক।বিষয়টি আমি স্থানীয় এমপি ও উপজেলাকে জানিয়েছি। '
তারাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আহম্মেদ হায়দার জামান জানান, '''উপজেলার কালারঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনও বরাদ্দ মেলেনি। বরাদ্দ পেলেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে''।
আগামীনিউজ/শরিফ