বরগুনাঃ জেলার বেতাগীতে আমন ধান কাটা আর মাড়াইয়ের শুরু থেেেকই উপজেলার বিভিন্ন পাকা সড়কের ওপর চলছে ধান মাড়াই আর খড় শুকানোর প্রতিযোগিতা।
এরপর স্তুপ করে রাখা হয় ওই সব শুকনো খড়। এমন দৃশ্য এখন চোখে পড়ে উপজেলার প্রত্যন্তপল্লী এলাকার সড়কগুলোতে। ফলে ওই সব সড়কে পথচারীদের চলাচলে ড়িাম্বনা ও প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
উপজেলার বিবিচিনি, হোসনাবাদ, মোকামিয়া, কাজিরহাট, চান্দখালী এসব সড়ক-মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তার উপর সারি সারি স্তুপ করে রাখছেন। অনেক স্থানে সড়কের উপরই চলছে, ধান মাড়াইয়ের উৎসব।
ধান মাড়াইয়ের পরেও, শেষ হচ্ছে না এর যন্ত্রনা। এরপর খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে দিনের পর দিন। এর ফলে এসব কালো পিচের সড়ক এখন সোনালী রং ধারন করেছে। চরম আতংক আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে পথচারীসহ সকল ধরনের যানবাহন। ভিজা ধানের খড়ের কারনে সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ যানবাহন পিছলে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও।
পৌরশহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হিজলতলা-হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিশা বাঁজার সড়কের রাস্তার উপর খড় শুকাচ্ছিলেন হানিফ সরকার। রাস্তার উপর কেন খড় শুকাচ্ছেন এর জবাবে তিনি বলেন, দিন দিন খোলা জায়গা কমে যাওয়ায় ধান, খড় শুকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সময়মতো শুকাতে না পারলে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এক ধরনের বাধ্য হয়েই পাকা রাস্তার ওপরই ধান শুকাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কে এসব শুকাতে সময়ও বেঁচে যায়। এতে পথচারীদেরা চলাচলে বিড়ম্বনায় পরলেও একটু দেখে শুনে চললে আর সমস্যায় পরতে হয়না।
উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের বরগুনা-বেতাগী আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ধানমাড়াই করছিলেন কৃষক হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রামের প্রায় সবাই এভাবে রাস্তার ওপরে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করে আসছে। কারণ আগে তো ধান মাড়াইয়ের জন্য বাড়ির উঠানে অনেক খোলা জায়গা ছিল। এখন তা আর নেই।
পৌর কাউন্সিলর মো: কামাল হোসেন পল্টু জানান, জায়গার অভাবে মানুষ সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছে। তাই বাধা দেওয়ারও সূযোগ কম। এতে সড়কে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোয় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেল আর অটোরিকশাগুলো।
ভাড়ায় চলিত মোটরসাইকেল চালক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কগুলোতে ধান মাড়াই ও শুকানোর সময় চলা কঠিন হয়ে যায়। তা ছাড়া এসব শুকানোয় সড়ক পিচ্ছিল হয়ে থাকায় একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।’
উপজেলা নাগরিক সচেতন পরিষদের সভাপতি এ.জেড.এম বদরুদ্দোজা জুয়েল বলেন, ‘সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ দুর্ভোগ নিরসনে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি জরুরি হয়ে পড়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘সড়ক আটকে যাতে কেউ যানচলাচলে বাধা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামীনিউজ/শরিফ