দেশের সমুদ্র সম্পদের রক্ষণাবেক্ষন ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করেছে সরকার। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিকভাবে হুমকির মুখে থাকা প্রবাল, গোলাপী ডলফিন, হাঙ্গর, রে মাছ, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, ঘাস, জীব বৈচিত্র্য এবং এদের আবাসস্থল সংরক্ষণ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মানোন্নয়ন, ব্লু ইকোনমি সমৃদ্ধকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-১৪) অর্জনের লক্ষ্যে এই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
বন শাখা-২ এর উপ-সচিব দীপক কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ৭০ মিটার গভীরে ওই এলাকার সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর মধ্যে উত্তরে বঙ্গোপসাগর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক জলসীমা এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এলাকা রয়েছে।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে সাগরের বুকে ৮ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া এখানে এককালে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, পাঁচ প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল।
এসব প্রজাতির অনেকগুলো এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও ধীরে ধীরে এসব জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে।
১৯৯৯ সালে সরকার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেন্ট মার্টিনের ৫৯০ হেক্টর এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছিল।
আগামীনিউজ/নাসির