ঝিনাইদহঃ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফসলি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী নিমাই চাঁদ মন্ডল ৪২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে ১টি করে ভোট পেয়েছেন তিনি।
ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাড. বজলুর রহমান ৪ হাজার ৬২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান পেয়েছেন ৪ হাজার ১৭৯ ভোট।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নুর উল্লাহ জানান, ওই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৪২৬ জন। ৯টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট পড়েছে ৮ হাজার ৮৪৪টি। ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন মাত্র ১টি করে ভোট।
নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, হরিণাকুণ্ডুর ৮টি ইউপিতে মোট ভোটার ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩৮৭ জন। এরমধ্যে ফলসী ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৪২৬। মোট ৯ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮ হাজার ৮৪৪টি। বাতিল হয়েছে ১৬১ ভোট। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনজনের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে নিমাই চাঁদ পেয়েছেন ৪২ ভোট।
নৌকার প্রার্থী নিমাই চাঁদ মণ্ডল বলেন, দলকে ভালোবাসি। দল থেকে নৌকা প্রতীক চেয়েছিলাম তা পেয়েছি। নৌকার যারা বিদ্রোহী ছিলো তারা দুজনই নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ করেছে। সেই কারণে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের দলে ভিড়েছে। আমি মানুষকে এক কাপ চাও খাওয়াতে পারিনি। খালি হাতে তো আর ভোট হয় না।
কিন্তু আমি আশা করেছিলাম মানুষ আমাকে ভালোবেসে নৌকা প্রতীককে ভালোবেসে ভোট দেবে। বর্তমানে আমার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুইটি গ্রুপ। যার ফলে দলের নেতাকর্মীরা দুইদিকে ভাগ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
বিজয়ী প্রার্থী অ্যাড. বজলুর রহমান বলেন, যিনি নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন তিনি জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন। মানুষ তাকে পছন্দ করেনি। দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছিল কিন্তু ভোটাররা তাকে পছন্দ করে না বলে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি মনে করি ভোটাররা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিকই। তারা প্রতীক না প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ফলসী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর নিমাই চাঁদ মন্ডল কাজ করছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণের আগে সে মাঠ ছেড়ে দেয়। যে কারণে তার এই ফলাফল হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগেরই একটি গ্রুপ তার বিরোধিতা করেছে বলেই সে হেরেছে।
এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন দুইজন। স্বতন্ত্র ৬ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্যদিকে জোড়াদহ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়েছেন দুজন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ছিল ৮২টি। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৭ জন প্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২৬৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪১০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭০ হাজার ২১১ জন ও মহিলা ভোটার ছিলেন ৬৯ হাজার ১৯৯ জন।
আগামীনিউজ/বুরহান