পটুয়াখালী: পর্যটন নগরী সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য মুখিয়ে আছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতো নতুন বছর বরণে কুয়াকাটায় আগমন ঘটে দেশ-বিদেশের লাখো পর্যটকের, এর ধারাবাহিকতায় এখানে সাজানো হয়েছে হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন স্পটগুলো। এরইমধ্যে অধিকাংশ হোটেলের সব রুম বুকিং হয়ে গেছে। নতুন সাজ নিয়েছে হোটেল আল-বেলাল আবাসিক, হোটেল সৈকতসহ অনেকগুলো। বছরের প্রথম দিন শনিবার থাকায় প্রতিবছরের তুলনায় এবার পর্যটকদের উপস্থিতি থাকবে দ্বিগুনের চেয়েও বেশী। পায়রা সেতু উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। কক্সবাজারে ঘটনায় কোন প্রভাব পরেনি কুয়াকাটায়।
থার্টিফাস্ট নাইটকে সামনে রেখে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে আবাসিক হোটেল মোটেল সূত্রে জানা গেছে। ইতেমেধ্যে আবাসিক হোটেল মোটেল গুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে সেজন্য রুমের মুল্য তালিকা টানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক। কক্সবাজারের মত কুয়াকাটায় যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য বিশেষ নজরদারী থাকবে প্রশাসনের তরফ থেকে। বিশ্বের একমাত্র পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্য উদয় ও সূর্য অস্ত দুটিই দেখা যায় সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমি থেকে, পর্যটকের অবিরাম ছুটে চলা লাল কাকড়া , শুটকি পল্লী, লেবুর বন, ঝাউবন, ঝিনুক চর, তিন নদীর মোহনা, মিশ্রীপাড়া বৌদ্ধ মন্দির, কুয়াকাটার কুয়া, গঙ্গামতির লেক। সমুদ্রপথে আনন্দে মেতে উঠবে, চর বিজয়, ফাতরার বন, ফকিরহাট, সোনাকাটা। সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে, ট্যুরিস্ট বোর্ড, স্পিড বোর্ড, উপভোগ করবে জেলেদের মাছ ধরার এ্যামেজিং দৃশ্য। পর্যটকদের আনন্দ উল্লাসে থাকবে ইলিশ পার্ক, সব মিলিয়ে পর্যটকদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করবে পর্যটন ব্যবসাযীরা এ আশা সবার।
সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলাস এর জেনারেলের ম্যানেজার আল আমিন খান উজ্জ্বল সাংবাদিকদের জানান, থার্টিফাস্ট নাইটে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ১২০০ টাকার টিকেটে ৩০/৩৫ রকম গালা ডিনার, লাইভ কনসার্ট, ডিজে পার্টি ও ফানুস উৎসব উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। তিনি আরও জানান, থার্টিফাস্ট নাইটে তাদের রিসোর্টের অধিকাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো: শাহ আলম হাওলাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, তাদের সমিতির আওতাভূক্ত আবাসিক হোটেলের সব রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তবে কোন হোটেল মালিক যেন পর্যটকের ভীড়কে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে এজন্য সার্বক্ষনিক তদারকি করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার এ প্রতিনিধিকে বলেন, অসংখ্য পর্যটক টোয়াক অফিসে কুয়াকাটা সম্পর্কে জানতে ও সহযোগিতা নিতে যোগাযোগ করছেন, অধিকাংশ পর্যটক নতুন যারা এই প্রথম কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসছেন, এবার নতুন বছর ও থার্টি ফাস্ট নাইট শনিবার থাকায় প্রচুর পরিমাণ পর্যটকের আগমন ঘটবে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়, পর্যটকদের সেবায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে টোয়াক পরিবার।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো: আব্দুল খালেক গনমাধ্যমকে বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দর্শনীয় স্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে। মোবাইল টিম ও রেসকিউ টিম কাজ করবে। নতুন বছরকে নতুন রূপ দেয়ার লক্ষ্যে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক এ প্রতিনিধিকে বলেন, আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোতে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে এজন্য ভাড়ার মুল্য তালিকা টানিয়ে রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আগামী নিউজ/এসএস