ঠাকুরগাঁও: এখন পৌষ মাস। মধ্যবর্তী শীত মৌসুম। আবহাওয়া-জলবায়ুর আপন বৈশিষ্ট্য অনুয়ায়ী ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় শীত তীব্র হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছেনা। শীত যা পড়ে তা কেবল সকাল ১০টার আগে ও বিকেল ৫টার পরে। আবহমান কালের ঋতুর নিয়ম ভেঙে অসময়ে ঝরছে অঝোরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে সকালে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ায কনকনে বাতাস ও শীত প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১.০ মিলিমিটার। নতুন বছরের শুরুতে একটি শৈত্য প্রবাহের কথাও আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৭টায় রাণীশংকৈলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে শীত ও কনকনে বাতাসে অসহায় হয়ে পড়েছেন বয়স্ক ও ছিন্নমুল মানুষগুলো। শীতের কাপড় না থাকায় তাদের অনেক কষ্টে দিন কাটছে।
৬৫ বছর বয়সী নাজিমউদ্দীন বললেন, অনেক বয়স হয়েছে কাজ করতে পারি না। তার উপর শীত আর বাতাসে হাত পা বাকা হয়ে আসছে। শুনেছি সরকার আমাদের মতো মানুষকে কম্বল দেয় কিন্তু আমরা রাণীশংকৈলে কোনো কিছু পাই না। গরীব মানুষের দিকে সরকারের সুনজর দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে, অসময়ের এই বৃষ্টিপাতকে আশির্বাদ হিসেবে দেখছেন এলাকার কৃষকরা। তারা জানান, ভুট্টা, গম ও আলুতে সেচ দিতে হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে তাদের সেচের অর্থ বেঁচে যাবে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে বোরো বীজতলাসহ অন্যান্য ফসলের কিছুটা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তারা।
উপজেলার লেহেম্বা গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানান, বৃষ্টি হওয়াই ভালোই হয়েছে। এতে আলু ও ভূট্টা ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে না।
রাতোর গ্রামের লিয়াকত আলী (৯০) বলেন, ‘এরকম ঠান্ডা মুই (আমি) জীবনেও দেখো নাই। সব সময় খালি আগুনের গোরত (কাছে) বসি থাকিবার মনায় ( মন চায়)। এলা ফের বৃষ্টি হচে কি যে করুম এলা ঠান্ডা আরো বারে গেল। একই ইউনিয়নের হামিদা বেওয়া বলেন, তীব্র শীতে বাহিরে বেরানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তার উপর আবার বৃষ্টি। এখন শীত আরো বেশি লাগতেছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, অসময়ের এই বৃষ্টিপাতের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না কৃষিতে। তবে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
আগামীনিউজ/ হাসান