নীলফামারী: জেলার সৈয়দপুরে পাঁচ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থী ছিলেন ২৯ জন। এর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন নৌকা ও লাঙ্গল মার্কার প্রার্থীসহ ১৩ জন। চতুর্থ ধাপের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে এটি ঘটে।
খাতামধুপুর ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী হাসিনা বেগম ভোট পেয়েছেন মাত্র ৯৩টি। গড়ে প্রতি কেন্দ্রে তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১০ দশমিক তিন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা মার্কার প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল কাশেম আলী ভোট পেয়েছেন ২২৬টি। টেলিফোন মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজ রেজা ৭৬টি ভোট পান। তারা সবাই জামানত হারিয়েছেন। এই ইউনিয়নে মোট ভোটারের মধ্যে পোলিং ভোটের সংখ্যা ১৪৭৭৮। সবচেয়ে বেশি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলো বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে জামানতও হারিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। ১০জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৬জন প্রার্থীর।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন আব্দুল হান্নান চৌধুরী আবু, তিনি টেলিফোন মার্কায় ভোট পেয়েছেন ৩৬৮। জামায়াত মনোনিত স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা মার্কায় ২০৩৩ ভোট পেয়ে জামানত হারানোর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। হাতপাখা মার্কার প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র নেতা জাহাঙ্গীর আলম ৩৬০ ভোট পাওয়ায় জামানত রক্ষা করতে পারেননি। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী টেবিল ফ্যান মার্কার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ওরফে রেজা চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৩২৯। এতো অল্প পরিমাণ ভোট দিয়ে তিনিও জামানত বাঁচাতে পারলেন না। এ ইউনিয়নের স্বনামধন্য ব্যক্তি শফিকুল আলম বসুনিয়া দুটি পাতা মার্কা নিয়ে ভোট পান ৬৫। তারও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিএনপি নেতা মোটরসাইকেল মার্কার প্রার্থী শরিফুল ইসলাম ১৯৪১ ভোট পেয়েও জামানত খোয়াতে হলো তাকে। এ ইউনিয়নে ভোট পোলিং হয়েছে ২৩৮১৬।
বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে প্রার্থীর সংখ্যা ছিলো ৪ জন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছে মাত্র ১ জন। জামানত হারানোর ব্যক্তির নাম জামিনুল ইসলাম। তিনি হাতপাখা মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান পদে লড়েন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনিত এ প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৬৯৮। এ ইউনিয়নে ১৩১৬২ জন নাগরিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।
কাশিরাম ইউনিয়নের চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে কারো জামানত বাজেয়াপ্ত হয়নি। তারা অনেক ত্যাগ করে হলেও জামানতের টাকা রক্ষা করে সম্মান ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। জামানত হারিয়েছেন কামারপুকুর ইউনিয়নের ছয় প্রার্থীর মধ্যে তিন জন। এদের মধ্যে একজন হলেন পল্লীবন্ধু আলহাজ্ব হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টির মনোনিত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী নূর আলম ভরসা। তিনি ভোট পেয়েছেন ২০২০। অপর দুজন হলেন চশমা মার্কার মোজাহারুল ইসলাম ও হাতপাখা মার্কার সাজেদুল ইসলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র হাতপাখা মার্কার প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১৮৬ এবং জামায়াত সমর্থিত চশমা মার্কার প্রার্থী পেয়েছেন ১২৯১ ভোট। সুশিল সমাজে এসব প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা থাকার পরেও তারা ভোটের রাজনীতিতে জামানতের টাকাটাও রক্ষা করতে পারেননি। এ ইউনিয়নে কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১২২৭১।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার রবিউল ইসলাম জানান মোট পোলিং ভোটের কমপক্ষে আটভাগের একভাগ প্রার্থী পেলে জামানতের টাকা ফেরত পান। কিন্তু ২৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জন প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে দেখা যায় তারা কেউ জামানত রক্ষা করার মত ভোট ভোটারদের কাছ থেকে নিতে পারেননি।
আগামীনিউজ/ হাসান