ফরিদপুর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর পেটে অস্ত্রোপচারের পরে পেটের মধ্যেই কাচি রেখে সেলাই করা এবং ৬৪৩ দিন পর বের করার ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে।
প্রতিবেদনে এ ঘটনার জন্য কে দায়ীতা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা হয়নি কিংবা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়নি। বিদেশী কয়েকটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে এ জাতীয় ঘটনা আগেও ঘটেছে। ওই প্রতিবেদনে অস্ত্রপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দেন গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ না থাকা এবং চিকিৎসকদের দায়ী না করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন ঐ তরুনীর পরিবার। এদিকে, তদন্ত কমিটির রিপোর্টটিতে চিকিৎসকদের বাচানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা তদন্ত কমিটির সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলেছেন।
গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি ছিলেন, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান। অপর দুই সদস্য হলেন, গাইনি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা ও সার্জিারি বিভাগের মো.কামরুজ্জামন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি কার গাফিলতিতে পেটে কেচি রাখার ঘটনাটি ঘটেছে তা সনাক্ত করতে পারেনি। পাশাপাশি ওই অস্ত্রোপচারের সাথে যুক্ত কারও ব্যাপারে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়,গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-দুই এর দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধিনে এ অস্ত্রোপচারের সময় আরও তিন/চারজন চিকিৎসক অংশ নেন।
পরিচালক বলেন, ওই প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন জার্ণালের উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়েছে এ জাতীয় ঘটনা রেয়ার নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত মনিরা খাতুন (১৯) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটি গ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ ওই মেডিকেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ ইউনিট টুতে এ অস্ত্রোপচার করা হয় । ওই সময় একটি কাচি মনিরার পেটে রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক। ওই ঘটনার পৌনে দুইবছর পর গত ১১ ডিসেম্বর হাসপাতালেই পুণরায় অস্ত্রপচার করে তরুণীর পেট থেকে কাচিটি বের করা হয়।
আগামীনিউজ/ হাসান