রাজবাড়ীঃ জেলার পাংশা উপজেলা ইউপি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে আজ রবিবার। উপজেলার কলিমহর ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিধান কুমার বিশ্বাস পেয়েছেন আনারস মার্কা।
কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক বিধান কুমার বিশ্বাস। ইতিমধ্যেই ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাক্তিগত ইমেজ তৈরি করে তুলেছেন তিনি। নির্বাচনী মাঠে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসাবে সাড়া জাগানো আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বিধান কুমার।
বর্তমান বৈশ্বিক করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে প্রথম যখন দেশের সাধারন মানুষের মাঝে এক আতঙ্কের তৈরি হয়েছিল ঠিক তখনই ইউনিয়নের তৃণমুল পর্যায়ের কর্মহীন হয়ে যাওয়া শ্রমজীবী অসহায় সাধারণ গরিব পরিবারের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বিধান কুমার। শুধু তাই নয় নিজ এলাকার হাটবাজারে জনসচেতনতা মূলক প্রচারণাসহ বিভিন্ন মসজিদ ও মন্দিরে হাত পরিস্কার করার সাবান, ডেটল ও ভাইরাস ধ্বংস করার জন্য স্প্রে বিতরণ করেছেন তিনি। এসব সেবামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পরিচালনার মাধ্যমে এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী বছরের ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার প্রায় ১০টি ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এখানের প্রার্থীরা খেলাধুলা ও সামাজিক অনুষ্ঠান গুলোতে অংশগ্রহণ, পোস্টার-ব্যানার ও নিজেদের ছবিসংবলিত নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ছাপিয়ে ভোটারদের মাঝে বিলি করছেন। পাশাপাশি ইনিয়নের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, স্থানীয় পর্যাযের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ গ্রহন করা সহ নিজেদের পক্ষে ভোটারদেরকে কাছে টানতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও কৌশলী হয়েও দিন–রাত প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
স্থানীয় পর্যায়ের এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ইউনিয়নের ছোট-বড় হাট-বাজারের চায়ের দোকান গুলোতে সকাল-সন্ধ্যার আড্ডায় প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক ও চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন সাধারন ভোটররা।
প্রার্থীদের কেউ কেউ উন্নয়নের নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করলেও প্রার্থীদের এসব তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন ভোটাররা। তাঁদের প্রত্যাশা, যতই প্রার্থীদের চাপ থাকুক না কেন, সৎ, যোগ্য ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিকে ব্যালেট বিপ্লবের মাধ্যমে সমর্থন দেবে জনগন।
ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফিরে দেখা গেছে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে একজন শিক্ষিত ও সৎ প্রার্থী হিসেবে বিধান কুমার বিশ্বাস সাধারন মানুষের মাঝে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন।
স্থানীয় হোসেনডাঙ্গা বাজারে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত একাধিক সাধারন মানুষ ও নতুন ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ইউপি নির্বাচনের আর কয়েকদিন বাকি আছে এই সময়ের মাঝেই সকল প্রার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছেন। যদি সুন্দর সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নিবার্চন অনুষ্টিত হয় তাহলে এখানে অব্যশই যোগ্য, সৎ ও অবিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং যারা সব সময় অসহায় গরিব সাধারন জনগনের বিপদে-পাশে থাকবে তাদেরকেই নির্বাচিত করবে ভোটাররা। তবে তাদের মতে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এখানে নতুন মুখ বিজয়ী হওয়ার আবাস পাওয়া যাচ্ছে তৃণমুল পর্যায়ের ভোটারদের মাঝে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী বিধান কুমার বিশ্বাস বলেন, পাংশা উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মধ্যে কলিমহর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ এখনো সাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শিক্ষা ও যাতায়াত ব্যবস্থায় রয়েছে অনেকটা পিছিয়ে। বিভিন্ন গ্রামে যতটুকু পাকা রাস্তা হয়েছে তাও বিগত অনেকদিন ধরে সংস্কারের অভাবে পরে রয়েছে এখনো। বিগত সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারন জনগনের ভোটে নির্বাচিত একাধিক চেয়ানম্যানগন তাদের দীর্ঘ দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বিভিন্ন রকম অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জনগনের টাকা লুটপাট করেছেন। বিগত দিনে তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কারনেই এখন জনগন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে তারা। আবার বিগত দিনে কোন কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যনগন তাদের অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারনে জনগনের দোরগোড়ায় কাঙ্খিত সেবা পৌঁছে দিতে ব্যর্থতার প্রমান দিয়েছেন। জনগনের ভোটে নির্বাচিত সেই সব চেয়ারম্যনদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অদক্ষতা এবং ব্যর্থতার কারনেই এখন পর্যন্ত উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে অনেকটা অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েছেন আমাদের ইউনিয়নের কয়েক হাজার সাধারন জনগন। আমি নির্বাচিত হলে এই এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে আমাদের ইউনিয়নকে বানাবো একটি আধুনিক ইউনিয়ন।
তিনি আরো বলেন, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেইসব দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ ব্যাক্তিদেরকে ইউনিয়নের সচেতন জনগন তাদের প্রতিনিধি হিসেব আর দেখতে চায় না। এখানে সকল পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হলে দক্ষ ও সৎ নেতৃত্বের প্রয়োজন। ইউনিয়নের মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ইউনিয়নের সাধারন সচেতন নাগরিকগন একজন শিক্ষিত, দক্ষতাসম্পন্ন, যোগ্য ও সৎ ব্যাক্তিকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
বিধান কুমার বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি মাঠ পর্যায়ে জনসংযোগ করে যাচ্ছি এবং মানুষের কাছ থেকে যথেষ্ট সারা পাচ্ছি। মানুষ আমাকে অনেক বেশি আশা এবং ভালবাসা দিচ্ছে। যদি সুষ্ট এবং অবাধ নির্বাচন হয় তাহলে আমি আমার জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
তিনি বলেন, যদিও স্থানীয় নির্বাচনে কিছু ঝামেলা হয়। এখন পর্যন্ত খুব বড় বেশি ঝামেলার সৃষ্টি হয়নি। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী এবং কিছু অসৎ নেতা আমার নির্বাচনী প্রচরণায় বাঁধা প্রদান করা ছাড়াও আমার কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমি যথেষ্ট সাহায্য পাচ্ছি তারা সব সময় তৎপর থেকে এই সকল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। যদি এইসকল বাধাবিপত্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করে সাধারণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে এসে সুষ্টভাবে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে তাহলে আমিই জয়ী হবো আশাকরি।
ইউনিয়নবাসীর উদেশ্য তিনি বলেন, আমার সবার কাছে অনুরোধ প্রিয় কলিমহর ইউনিয়নবাসী অনুগ্রহ করে আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভোটটি নষ্ট করবেন না, বিগত দিনগুলোতে দেখেছেন যে আপনাদের এই ইউনিয়নে কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের একটু ছোয়াও লাগেনি এই ইউনিয়নে। তাই এই বছরে আপ্নেরা যোগ্য দেখে আপনাদের ভোটটি দিবেন। আমি জনবিচ্ছিন্ন নয়, এখানের সকল শ্রেনী পেশার সাধারন মানুষের দোয়া ও আন্তরিক ভালবাসা এবং তাদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একজন জনবান্ধব জনপ্রতিনিধি হিসেব জনগনের ন্যায্য অধিকার তাদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এলাকার সাধারন জনগন তাদের পবিত্র আমানত মহামূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে, জনগনের সেবক হিসেবে সততা ও দক্ষতার সাথে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়নের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে সক্ষম হবো বলে আমি আশাবাদী। নির্বাচিত হলে সাধারন জনগনের গুরুদায়িত্ব সৎ ও নিষ্ঠার সাথে পালনের মাধ্যমে অসহায় গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আমি কাজ করে যাবো কথা দিচ্ছি।
আগামীনিউজ/নাসির