গাইবান্ধা: জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে শতবর্ষী একটি কবরস্থানের জমিতে নকল পোল্ট্রিফিড ও ফিশফিড কারখানা স্থাপনের জন্য জমি দখল করতে ঘরে আগুন দিয়ে উল্টো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলা ও বিভিন্নমূখী হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।
কবরস্থানের জমির মালিকদের দু’জন দরিদ্র অংশীদারের কাছ থেকে প্রতারণা করে গোপনে ৫ শতাংশ জমি কিনে দ্বিগুণ জমি দখল করে নিয়ে সে সম্পূর্ণ কবরস্থানসহ এলাকার সকল জমি-বাড়ি টাকা অথবা অস্ত্রের জোরে দখল করার ঘোষনা দিয়ে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে বলে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মহিমাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ রোড এলাকার মাষ্টারপাড়ায় ১৮.৮৭ শতাংশ জমিতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। যার জেএল নং- ৩১০, খতিয়ান নং- ২১৩৫, হাল দাগ নং- ৩৭৪৪, ৩৭৪৫ সম্পূর্ণ আলাদা কবরস্থান পর্চাভূক্ত।
থানায় অভিযোগকারী জানান, আমাদের বংশের লোকজন মারা গেলে সম্মানের সাথে তাঁদের এবং প্রতিবেশী কেউ ইচ্ছা পোষণ করলে তাঁদেরও দাফন করা হয়ে থাকে। উক্ত কবরস্থানটি বর্তমানে পাকা রাস্তার সংলগ্ন হওয়ায় পাশ^বর্তী শালমারা ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের মৃত সোলায়মানের পুত্র নকল মাছের খাদ্য ও পশুখাদ্য প্রস্তুতকারী আ: মান্নান তার নকল মালামালের কারখানা তৈরির লক্ষ্যে দু’জন দরিদ্র অংশীদারের কাছ থেকে প্রতারণাপূর্বক ও অত্যন্ত গোপনে ৫ শতাংশ জমি কবলা করে নেয়। বিষয়টি জানার পর তার কাছে এর প্রতিবাদ করলে সে একদল সন্ত্রাসী নিয়ে জমির মালিকদের উপর চড়াও হয়। মহিমাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ও থানার পুলিশ এসে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করে তাদের।
এরপর খোঁজ নিয়ে জানা যায় মাত্র ৫ লক্ষ টাকায় ওই ৫ শতাংশ জমি কিনে সে দলিলে মূল্য লিখিয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। দুই ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ শতাংশ জমি কিনে সে তিন ভাইয়ের সাড়ে ৭ শতাংশ জমি এবং কবরস্থানের উপরের একটি অংশ দেওয়াল দিয়ে দখল করার চেষ্টা করে। সম্পূর্ণ কবরস্থান দখল করতে সে একাধিকবার ওই কবরস্থানে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় দেওয়াল তোলার চেষ্টা করে। এ সমস্যার সমাধানে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অনুষ্ঠিত শালিসে সে আরও বেশি টাকা নিয়ে দলিল করে দিতে রাজি হয়ে সে শালিসও আবারও অমান্য করে। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের উপস্থিতিতে তার প্রকৃত ৫ শতাংশ জমি বুঝে নেয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার সকালে সে সম্পূর্ণ জমিতেই দেয়াল তোলার কাজ শুরু করে। কবরস্থানের অংশীদার ও স্থানীয় লোকজন তাকে এ কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে সে সেখানকার একটি ঘরে এবং বাধা দিতে যাওয়া লোকজনের গায়ে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন দিয়ে পালাতে গেলে এলাকাবাসী তাকে আটকে ফেলে। পরে কৌশলে আবার পালিয়ে গিয়ে উল্টো স্থানীয় লোকজনকেই আসামী করে অভিযোগ করে থানায়। এখন সে সবাইকে জীবননাশসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকার লোকজন ও ভুক্তভোগীরা নকল মালামালের কারখানার মালিক ওই সন্ত্রাসীর হাত থেকে শতাব্দী প্রাচীন কবরস্থানটি ও নিরীহ লোকজনকে রক্ষা করতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।
আগামীনিউজ/ হাসান