কুড়িগ্রাম: জেলার রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক কর্তৃক এক ভোটারকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা রাজারহাট বাজারে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সভা করেছে। প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়েছেন অপর তিন প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী।
অন্যদিকে ওই রাতেই ঘরের গ্লাস, নৌকা প্রতীক, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর এবং পোস্টার ছেড়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম বাদশা, আজগর আলী এবং মাজেদুর রহমান বুলন সহ ২২জনের নামে অভিযোগ করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক। পাল্টা এনামুল হকের বিরুদ্ধে প্রাণ নাশের হুমকী ও ভোটারকে লাঞ্চিত করারও অভিযোগ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিশ্বর তালুক মৌজার ভাটার পাড় নামক স্থানে জনসংযোগ করা কালীন ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক হরিশ্বর তালুক গ্রামের নুরুন্নবী মোল্লা (৩০) কে তার পক্ষে নির্বাচনী কাজ করার প্রস্তাব দেন। এতে নুরুন্নবী মোল্লা অস্বীকৃতি জানালে প্রার্থী এনামুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে প্রার্থী নিজেই প্রকাশ্যে নুরুন্নবীকে চড় থাপ্পর দিয়ে লাঞ্চিত করেন বলে অভিযোগ উঠে।
বৃহস্পতিবার রাতে এঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী রাজারহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন। পরে তারা বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সোনালী ব্যাংক চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে লাঞ্চনার শিকার নুরুন্নবীর সহ তার পক্ষে বক্তব্য রাখেন, উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের স্বতন্ত্র তিন প্রার্থী রহিম বাদশা, আজগর আলী এবং মাজেদুর রহমান মন্ডল বুলন।
লাঞ্চনার শিকার নুরুন্নবী মোল্লা অভিযোগ করেন, প্রার্থী এনামুল হক আমাকে তুই বড় নেতা হয়ে গেছিস,আমার বিরোধিতা করিস বলে আমাকে চড়, থাপ্পর, কিল, ঘুষি মেরে লাঞ্চিত করেছে এবং নির্বাচনের পর দেখে নিব বলে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়েছে। আমি থানায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।
এবিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন,ঘটনা আমার ছাত্রলীগের একটা ছেলের সাথে। একটা বেয়াদবি করছে আমি একটা চড় দিয়েছি। এরপ্রেক্ষিতে ওরা তিনজন প্রার্থী একসাথে হয়ে দুই আড়াইশ লোক নিয়ে আমার বাসায় সামন দিয়ে মিছিল করে আসার সময় ঢিলে গ্লাস ও নৌকা ভেঁঙ্গে দিয়েছে এবং পোষ্টার ছিড়েছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম বাদশা বলেন, আজীবন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছি,জাতীয় পার্টি থেকে অনু-প্রবেশকারী এনামুল হক প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী এবং আমার সর্মর্থকদের ফাঁসাতে বঙ্গবন্ধূ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবমাননার দুঃসাহস দেখিয়েছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচার দাবী করেন তিনি। একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আজগর আলী।
রাজারহাট থানার ওসি তদন্ত পবিত্র কুমার বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক তিন প্রার্থী সহ থানায় ২২জনের নাম উল্লেখ পূর্বক কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া নুরুন্নবী মোল্লা এনামুল হকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আগামীনিউজ/ হাসান