সান্তাহারে নারী চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছবি এডিট করে ষড়যন্ত্র

আদমদীঘি প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৮, ২০২১, ০৪:৪৪ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

বগুড়াঃ জেলার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউপি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো একজন নারী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ঘিরে বেশ আলোচনা চলছে। একটি এডিট করা ছবিই সেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনোনয়ন না পেয়ে এই ষড়যন্ত্রে সরাসরি মূখ্য ভুমিকা পালন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা এরশাদুল হক টুলু। এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে নারী উদ্যোক্তা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য নাহিদ সুলতানা তৃপ্তিকে (নৌকা প্রতীক) মনোনয়ন দেয়া হয়। এদিকে মনোনয়ন না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা এরশাদুল হক টুলু। গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন ঘোষণার পর তিনি এলাকায় ফিরে একটি এডিট করা ছবি পুঁজি করে তার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন। প্রথমে ওই ছবিতে একটি ক্যাপশন দিয়ে ‘৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ সালে রাজাকার আব্দুল মোমিন তালুকদারের নিকট ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি।’ এরপর সেই ছবি স্থানিয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের হাতে পৌঁছে দেন। পরে সেই ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত এমন অভিযোগ এনে গত সোমবার দুপুরে দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবীতে সান্তাহার ডাকবাংলোতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। পরের দিন তিনি স্থানিয় কিছু নারী-পুরুষকে দিয়ে একটি মানববন্ধনও করান। আর এসব কারনে তৃপ্তির বিরুদ্ধে তার ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ ঘটে। 

জানতে চাইলে এরশাদুল হক টুলু বলেন, তৃপ্তি আগে কখনও আওয়ামীলীগ করেনি। তিনি সাবেক বিএনপির দলীয় সাংসদ আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকার কাছে গিয়ে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপি’তে যোগদান করেন। সম্প্রতি আওয়ামীলীগে ভিড়েছেন। ছবির বিষয়ে তিনি বলেন, ফেসবুকে ছবিটি পেয়েছি। 

নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা সান্তাহার পৌর নির্বাচনে নৌকার প্রচারনাকালে আমার অফিস আসলে তাদের ফুলের তোরা দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। আর সেই ছবিটি ফেসবুক থেকে নিয়ে তারা এডিট করে আমাকে বিএনপি বানানোর চেষ্টা চালিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অথচ আমি দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামীলীগ করে আসছি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক নিসরুল হামিদ ফুতু বলেন, তৃপ্তি একজন যোগ্য প্রার্থী। একারনে আমরা তাকে সমর্থন করি। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তিনি জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া তৃপ্তির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেসবের কোনো সত্যতা নেই। কেউ নৌকার বিরুদ্ধে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই কথা বললেন সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জামিল হোসেন। 

জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সান্তাহার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু বলেন, তৃপ্তি উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য। প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নৌকার জয়লাভের জন্য আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিৎ। অথচ সেখানে নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে দ্রুত দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আগামীনিউজ/নাসির