গাজীপুরে পোশাক কর্মী খুন, পাঁচ বছর পর গ্রেপ্তার তিন আসামি

গাজীপুর প্রতিনিধি নভেম্বর ২৩, ২০২১, ১০:৪৬ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

গাজীপুরঃ গাজীপুরে পরকীয়া প্রেম ও জমি-জমার বিরোধের জেরে মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৫) নামে এক পোশাককর্মীকে খুনের পাঁচ বছর পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুরের পিবিআই কর্মকর্তারা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানার সুরাবাড়ি এলাকার মো. সাইদুর রহমান শাহীন সরকার (৫৮), একই এলাকার মো. মোমিরুল দেওয়ান (৪৮) ও মো. শরীফ দেওয়ান (৩৩)। গত দুদিন অভিযান চালিয়ে স্থানীয় সুরাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে সাইদুর রহমান ও শরীফ সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার মোমিরুলকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এসব তথ্য জানানো হয়। নিহত আরিফের গ্রামের বাড়ি পাবনার চাটমোহর কুয়াবাসি এলাকায়। তিনি গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় ভাড়া থেকে কালিয়াকৈর থানাধীন উত্তর গজারিয়া এলাকার স্ক্যানডেক্স টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে কারখানায় ডাইং কিউ.সি পদে চাকরি করতেন। পাশাপাশি ঝুটের ব্যবসা করতেন তিনি।

ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সঙ্গে আসামিদের পরিচয় হয়। ইতোমধ্যে ভিকটিম কাশিমপুর থানাধীন সুরাবাড়ী এলাকার দলিল লেখক উসমান আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকাকালে তার (উসমানের) স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এছাড়াও ভিকটিম সুরাবাড়ী এলাকায় কিছু জমি কিনলেও তিনি ওই জমির দখল আজও বুঝে পাননি। এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তাররা তাদের সহযোগী আসামিদের পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে ঝুট বিক্রির কথা বলে আসামিরা আরিফকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। পরে আরিফ জুট কেনার টাকা নিয়ে গেলে আসামিরা তার কাছ থেকে ঝুট কেনার ৫০ হাজার টাকা নিয়ে কাশিমপুর থানাধীন সুরাবাড়ী এলাকার জারা ফ্যাক্টরির পশ্চিমে কালিদত্তের বাঁশ বাগানে ভিকটিমকে নিয়ে গলা কেটে, অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করে।

পরদিন বাঁশ বাগানে লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে নিহতের ছোট ভাই সেখানে গিয়ে আরিফের লাশ শনাক্ত করেন এবং ২৬ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে নিহতের ছোটভাই মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে কাশিমপুর থানায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন। মামলাটি গাজীপুর জেলা ও গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ দীর্ঘ তিন বছর এক মাস ১৪ দিন তদন্ত শেষে মামলার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পিবিআইকে তদন্তভার দেয় আদালত। পরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ বছরের ২২ ও ২৩ নভেম্বর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন মিয়া জানান, সোমবার তাদের মধ্যে সাইদুর রহমান, শাহীন সরকার ও শরীফ দেওয়ান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার মেমিরুলকে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

আগামীনিউজ/শরিফ