নোয়াখালীঃ জেলার সুবর্ণচর উপজেলার মধ্য চরবাটা গ্রামে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ইঁদুরের বিষ খেয়ে এক নরসুন্দরের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম তরুণ চন্দ্র মজুমদার(৩২)।সেই পার্শ্ববর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের উড়ির চরে নরসুন্দর এর কাজ করতেন। তিনি উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের মধ্য চরবাটা গ্রামের মৃত কান্তিলাল মজুমদারের ছোট ছেলে।
ওই নরসুন্দর তরুণের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১১ বছর আগে লক্ষীপুর জেলার রামগতির জাঙ্গালিয়া গ্রামের মেয়ে পূর্ণিমা রাণীর সঙ্গে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাঁদের দুই মেয়ে এক ছেলেসন্তান রয়েছে।
নিহতের বড়ভাই মরন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ১৫ দিন আগে নরসুন্দরের কাজ করার সময় তিনি অসুস্থ হলে জেলা শহরের একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করায়। এখনও তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেননি। অসুস্থতার কারণে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে গতকাল দিনভর স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিজেদের বসতঘরে থাকা ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে ফেলেন তরুণ চন্দ্র মজুমদার। কিছুক্ষণ পর শরীরে অস্বস্তি বোধ করেন এবং ইঁদুরের বিষ খেয়েছেন বলে মেয়ে মিতু রানী মজুমদারকে জানালে তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রথমে গ্রাম্য পল্লী চিৎিসকের কাছে নিয়ে যান। পরে গ্রাম্য চিকিৎসক ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিল্টন দেবনাথ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা রানী বলেন , ‘আমার স্বামীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। সে তাঁর অসুস্থতার কারণে বাড়িতে চেঁচামেচি করত। আমাদের মধ্যে কোনো কথা-কাটাকাটি হয়নি। কেন যে ইঁদুরের বিষ খেল, বুঝতে পারছি না।
নিহত তরুণ চন্দ্র মজুমদারের মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পডুয়া শিক্ষার্থী মিতু রানী মজুমদার বলেন বলেন, ‘আমার বাবা মায়ের সঙ্গে ভালোই ছিল। হঠাৎ কেন বিষ খেল, বুঝতে পারছি না।’
৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মিল্টন দেবনাথ বলেন, হাসপাতালে আসার আগে তিনি মারা যান। হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শুকনো কোন বিষ খেয়েছেন বলে তিনি জানান।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগামীনিউজ/নাসির