স্বতন্ত্র নারী প্রার্থীর প্রচারণায় বাঁধা

সুদীপ্ত শামীম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি নভেম্বর ১৪, ২০২১, ০৯:২৩ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

গাইবান্ধা: আসন্ন ইউপি নির্বাচনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে একমাত্র মহিলা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জোৎস্না বেগম জনতার নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা। এঘটনায় মারামারিতে প্রার্থীর দেবর আসাদুজ্জামান ভুট্টু গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি রোববার বিকেলে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মন্ডলের হাটস্থ প্রার্থী জনতার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঘটেছে। জনতা ছাপড়হাটী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার সময় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতার নির্বাচনী কার্যালয়ে তার দেবর মামুন সরকার নির্বাচনী প্রচারণার রেকর্ডিং একটি সাউন্ড বক্সে চেক করছিলেন। এসময় পাশের মুদি দোকানদার ও ওই ইউনিয়নের পূর্ব ছাপডহাটী (হাউদের ভিটা) গ্রামের মৃত মনছুর আলীর ছেলে মশিউর রহমান বাঁধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির হয়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন প্রার্থীর দেবর আসাদুজ্জামান ভুট্টু। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এদিকে, ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন মশিউর রহমান। সেই সাথে মন্ডলের হাটের দু'একটা চায়ের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বাজার হয়েছে জনশূন্য। এ অবস্থায় এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতার দেবর সুমন সরকার বলেন, 'মন্ডলের হাটস্থ আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রচারণার রেকর্ড সাউন্ড বক্সে পরিক্ষা করা হচ্ছিল। এসময় পাশের দোকানদার মশিউর রহমান এসে বাঁধা দিলে তর্কাতর্কি হয়। তখন মশিউরের ভাতিজা মিল্টন, মিথুন ও রানা এসে আমার বড়ভাই আসাদুজ্জামান ভুট্টুকে ধাক্কা ও কিল-ঘুষি মারে। পরে পাশের চায়ের দোকান থেকে খড়ি নিয়ে এসে এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকে। এতে সে গুরুতর আহত হয়।'

অভিযুক্ত মশিউর রহমান আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জোৎস্না বেগম জনতা বলেন, 'গত শুক্রবার নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে ওই অফিস উদ্বোধন করা হয়। গতকাল শনিবার মশিউর রহমান অফিস করতে বাঁধা দেয়। আমরা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। রোববার ঘটনার সময় সাউন্ড বক্সে রেকর্ডিং পরিক্ষা করা কালে সে আবারও এসে বাঁধা দেয়। এতে আমার লোকজন প্রতিবাদ করতে গেলে মশিউর ও তার ভাতিজারা আমার দেবরকে মারপিট করেন। এখন সে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।' 

তিনি আরও বলেন, 'এঘটনায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছি। আমি প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।'

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচনে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, 'এব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তারা আমাকে বলুক। তারপরে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, 'খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।'

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় কোন বাঁধা নেই৷' 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে ইনশাআল্লাহ। এতে সন্দেহের কোন কারণ নেই।'

আগামীনিউজ/ হাসান